নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে?

নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে?

নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ কোথা থেকে আসে: ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (National aeronautics and space administration) যাকে সংক্ষেপে NASA বলে অভিহিত করা হয়, সেটি হল যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বাধীন সংস্থা। এই সংস্থাটি মূলত মহাকাশ সম্পর্কিত গবেষণা পরিচালনা করে। এছাড়াও নাসা বিমানচালনা বিদ্যা সম্পর্কিত গবেষণা গুলো সম্পন্ন করে। Read in English

ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) সর্বপ্রথমে ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। নাসার হাত ধরেই সর্বপ্রথম এবং শেষ বারের মত মানুষ চাঁদে পৌঁছেছিল। 1969 সালে নাসা চাঁদের উদ্দেশ্যে মহাকাশযান পাঠাই। এবং ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নীল আর্মস্ট্রং এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে বাজ আল্ড্রিন চাঁদের মাটিতে পা রাখেন।

এখন আমাদের মনে এই প্রশ্নটিই অবশ্যই আসতে পারে নাসা এত টাকা কোথায় পাই? মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা করার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ হয় প্রতিনিয়ত এই গবেষণা পরিচালনা করার জন্য। পৃথিবীর বাইরে কি আছে পৃথিবীর বাইরের মানুষ কিভাবে আরো কর্তৃত্ব প্রদান করতে পারে সেই সকল গবেষণার জন্য নাসা প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে আসছে। আমাদের সবার মনেই প্রায় সময় এই প্রশ্নটি আসে যে নাসা কিভাবে তাদের অর্থের যোগান দেয়। আপনাদের এই সকল প্রশ্নের উত্তর আমাদের আজকের এই আলোচনা থেকে জানতে পারবেন।

স্মার্টফোনের বিকল্প হিসেবে নতুন প্রযুক্তির ভবিষ্যৎবাণী করলেন বিল গেটস

নাসার পরিচিতি ও সৃষ্টি

১৯৪৬ সালে অ্যাডভাইজারি কমিটি ফর আর অন্যটি রকেট বিমান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিল। সেই সময় প্রতিষ্ঠানটি সুপারসনিক বেল এক্স ১ নিয়ে তাদের গবেষণা চালাচ্ছিল। পরবর্তীতে ১৯৫০ এর দশকের শুরুর দিকে এ কমিটির ওপর একটি কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের গুরু দায়িত্ব এসে পড়ে। এ প্রজেক্ট এর নাম দেওয়া হয় ভ্যানগার্ড। ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর সোভিয়েত স্টেজ প্রোগ্রাম এর প্রথম কৃত্রিম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত তাদের প্রথম কৃত্রিম স্বাধীনতার জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়। নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ প্রয়োজন হয় অনেক। 

এবং তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও তার উপদেষ্টারা আলোচনা করার মাধ্যমে ১৯৫৮ সালের ১৪ ই জানুয়ারি ন্যাশনাল রিসার্চ প্রোগ্রাম ফর স্পেস টেকনোলজি নামে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এবং এই পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তীতে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) প্রতিষ্ঠা করা হয়।নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে?

নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে?

নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে? এই প্রশ্নটিই অনেকের মনেই ঘুরতে থাকে। অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান। আমরা আমাদের এই আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের জন্য একটি মানানসই উত্তর তৈরি করেছি। নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান কোথা থেকে আসে? প্রশ্নের উত্তর আমাদের আজকের এই আলোচনা থেকে আপনি জানতে পারবেন।

নাসা বা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বছর জাতীয় বাজেট থেকে নির্দিষ্ট একটি অংশ নাসার কার্যক্রম চালানোর জন্য নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বাজেটের ০.৪৮% অর্থ নাসার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যয় করা হয়। ২০২০ সালের যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বাজেটের এই অংশের হিসাব করলে দাঁড়ায় ২২.৬২৯ বিলিয়ন ডলার। এবং প্রতি বছর এই বাজেট বৃদ্ধি হচ্ছে।

স্মার্টফোন বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট এবং নাসার অংশ

১৯৬৬ সালে অ্যাপোলো প্রোগ্রাম চলাকালীন সর্বপ্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বাজার থেকে নাসা কে ৪.৪১% শতাংশ অর্থ প্রদান করা হয়। এই নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ থেকে নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ প্রদান করা হয়। ১৯৭৫ সালে ফেডারেল বাজেটের অংশ নাচার জন্য বরাদ্দ করা হয় মোট ১%। এবং ১৯৯৯ সালে পর্যন্ত নাসার জন্য বরাদ্দকৃত অংশ প্রায় ১ শতাংশ ছিল। তবে এরপর থেকে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে এবং ২০০৬ সালে তা দাড়ায় ০.৫ শতাংশ।

রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে নাসার ট্রানজিশন অথোরাইজেশন একটা স্বাক্ষর করে এর বাজেট প্রায় ১৯.৫ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করে। নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ এইভাবেই যোগান দেয়া হয়। 

তবে ২০২০ এর ফেডারেল বাজেট অনুযায়ী নাসার গবেষণার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দাঁড়ায় প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার।

নাসার অর্থ ব্যয়ের খাত

নাসা মূলত তাদের বিভিন্ন গবেষণার কাজেই এই অর্থ খরচ করে থাকে। মহাকাশ জ্যোতির্বিজ্ঞান স্পেসশিপ ইত্যাদি খাতে নাসা প্রধানত তাদের অর্থ ব্যয় করে। এবং এই কাজে নিয়োজিত বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করা হয়। নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ যোগান কোথা থেকে আসে?NASA-And-Space-X

নাসায় কর্মরত সকল বিজ্ঞানীদের বেতন নির্ধারণ করা হয় আমেরিকার সরকারের বেতন রেখা অনুসরণ করে।

যারা নাসায় কাজ করে তারা বেশিরভাগই আমেরিকার সরকারের কর্মচারী এবং প্রত্যেকেই আমেরিকান। নাসা একটি সরকারি সংস্থা এবং প্রতি বছর আমেরিকার ফেডারেল বাজেটের নির্দিষ্ট অর্থ সাহায্যের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। তাই সরকারি বেতন নীতি অনুযায়ী নাচাতে কর্মরত সকল বিজ্ঞানী এবং কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণ করা হয়। নাসার বিশাল একটি অর্থ ব্যয় হয় এর কর্মরত বিজ্ঞানী ও অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন প্রদান করতে।

নাসার কর্মচারী ও ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন তালিকা

নাসা বিজ্ঞানীদের অর্থ কোথা থেকে আসে বা কোন উৎস থেকে নাসা অর্থ পায় যা দিয়ে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে সে বিষয়ে তথ্য জানার পর অবশ্যই আপনাদের জানতে ইচ্ছা হবে নাসায় কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার বা বিজ্ঞানীদের কি পরিমান বেতন দেওয়া হয়। আপনি যদি এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন তাহলে অবশ্যই আমাদের আজকের এই আলোচনাটি আপনার উপকারে আসবে। আমাদের আজকের এই আলোচনা থেকে আপনারা এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ সংক্রান্ত তথ্য দেখুন।  

স্মার্ট হব কিভাবে? স্মার্ট হয়ে ওঠার সহজ উপায়

বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন তালিকা

ইঞ্জিনিয়ার বেতন
কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার  ৯৮ হাজার মার্কিন ডলার
ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার  ৯৯ হাজার মার্কিন ডলার
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার  ১ লক্ষ মার্কিন ডলার
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার  ৯৫ হাজার মার্কিন ডলার
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার  ৯৯ হাজার মার্কিন ডলার
প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার  ৭৮ হাজার মার্কিন ডলার
প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার  ৯০ হাজার মার্কিন ডলার

পরিচালন বিভাগের কর্মচারীদের বেতন তালিকা

কর্মচারী বেতন
সুরক্ষা ইঞ্জিনিয়ার  ১ লক্ষ ৩৬ হাজার মার্কিন ডলার
প্রযুক্তিগত পরিচালক ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মার্কিন ডলার
বিভাগীয় প্রধান ১ লক্ষ ৭৮ হাজার মার্কিন ডলার
উপ-পরিচালক ১ লক্ষ ৮১ হাজার মার্কিন ডলার
তথ্য বিশেষজ্ঞ ৮৫ হাজার মার্কিন ডলার
চুক্তি বিশেষজ্ঞ ৮৪ হাজার মার্কিন ডলার

কিভাবে নাসায় চাকরি পাওয়া যায়?

কিভাবে নাসায় চাকরি পাওয়া যায় এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছা পোষণ করলে আমাদের আজকের আলোচনার এই অংশটি আপনাদের বিশেষ কাজে আসবে। আলোচনার এই অংশে আমরা আপনাদের জানাব কিভাবে নাসাঈ চাকরির জন্য যোগ্যতা অর্জন করা যায়।

নাসায় চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে যে তথ্যটি জানা দরকার সেটি হল নাসা তাদের নিজস্ব দেশের নাগরিক ব্যতীত অন্য কাউকে চাকরি প্রদান করে না। অর্থাৎ নাসায় চাকরি পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে আমেরিকার নাগরিক হতে হবে। নাসায় চাকরি নেওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞান শাখায় ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে গণিত পদার্থবিজ্ঞান রসায়নবিজ্ঞান ইত্যাদি বিভাগ থেকে আপনার গ্রাজুয়েট ডিগ্রী অবশ্যই থাকতে হবে। এবং শূন্য পদ অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগের যোগ্যতা ভিন্ন হয় এবং নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হতে পারে।

যে কোন দেশের মহাকাশ সম্পর্কিত তথ্য সমূহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনভাবেই এই সকল প্রজেক্টে তথ্য বাট এটা যাতে চুরি না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়। তাই সরাসরি অন্য দেশের কোনো নাগরিককে নাসাতে চাকরি দেওয়া হয় না।

নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থ কোথা থেকে আসে? নাসার বিভিন্ন কর্মচারী ও বিজ্ঞানীদের বেতন তালিকা, নাসার পরিচিতিও সৃষ্টি, নাসায় চাকরি পাওয়ার নূন্যতম যোগ্যতা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আজকের এই আলোচনায় উল্লেখ করা হলো। আজকের আলোচনার মূল বিষয় ছিল নাসার বিজ্ঞানীদের অর্থের যোগান। সেই তথ্যসমূহ আলোকপাত করার পরেও আমরা নাসা সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য আপনাদের জানিয়েছি। আশা করি আমাদের প্রকাশিত প্রতিটি তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হবেন। এবং আপনাদের জানার ইচ্ছা পূর্ণ হবে। তবে এ বিষয়ে আরও তথ্য জানতে চাইলে অবশ্যই আমাদের সাথে

Start a Conversation

Your email address will not be published. Required fields are marked *