রাতে জমজ বাচ্চা নিখোঁজ , সকালে মিললো লাশ

নিজের মায়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে কণা নামের এক মহিলা তার জমজ দুই মেয়ে কে নিয়ে রাত্রে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাদের নাম মনি ও মুক্তা। গভীর রাতে যখন তার ঘুম ভাঙ্গে তখন তিনি দেখেন তার পাশে দুই মেয়ে নেই। Read in English

তখন তিনি একটা অনেক চিন্তায় পড়ে যান। নিজ দুই মেয়েকে কাছে না পেয়ে তিনি মাঝরাতে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তার চিৎকার শুনে বাড়ির সবার ঘুম ভেঙ্গে  যায় এবং আশেপাশের প্রতিবেশীরা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তখন তিনি বলেন তার দুই মেয়েকে তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। সেই রাতে তার প্রতিবেশী সহ সবাই তার দুই মেয়ে কে খুঁজতে বের হয়। প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশের পুকুরে জমজ মেয়ে দুটির মৃত লাশ ভাসমান অবস্থায় পায়।

ঘটনাটি ঘটে মনি-মুক্তার নানার বাড়ি খুলনা তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে। পুলিশ শুক্রবার ভোরে এসে মেয়ে দুটির লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করে।

জমজ বাচ্চা খুন

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্থানীয় সূত্রে এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পারে কুশলা গ্রামের খায়ের শেখের মেয়ে কনার সাথে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামের মাসুম বিল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে নানান বিষয় নিয়ে ঝুট ঝামেলা হতেই থাকতো, এর জন্য বেশিরভাগ সময় কনা বেগম তার মায়ের বাড়িতে থাকতেন মাসুম বিল্লাহ পরে জানতে পারেন তার স্ত্রী কনা অন্তঃসত্ত্বা তখন তিনি তাকে তার মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। চাকরি সূত্রে তিনি একজন ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং মাঝে মধ্যে তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে আসতেন।

কনা তার দুই মেয়েকে নিয়ে অন্যান্য দিনের মতোই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন রাত তিনটার দিকে তিনি হঠাৎ আবিষ্কার করেন তার পাশে তার দুটো মেয়ে নেই তখন তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন এবং চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীসহ সকলে ছুটে আসেন এবং অনেক খোঁজাখুঁজির পরে তারা মেয়ে দুটি লাশ বাড়ির পাশের পুকুরে ভাসমান অবস্থায় আবিষ্কার করেন। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তেরখাদা থানা পুলিশ সকাল ছয়টার দিকে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানান যে, শিশু দুইটিকে পারিবারিক কলহের জেরে, হত্যা করা হয়েছে কারণ তাদের মাতা-পিতার পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত এবং তারা পারিবারিকভাবে খুব একটা সুখী ছিলেন না। তাছাড়া মাসুম বিল্লাহ ঘটনার দিন রাত্রে গাংনীতে ছিলেন। এবং পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নানান অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে, যার কারণে পুলিশ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। পুলিশ জানান পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে, আপাতত কেউ সন্দেহের বাইরে নয়। গাংনী থানা পুলিশ ইনচার্জ বলেন তদন্ত চলছে পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। এদিকে দুই মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। পার্শ্ববর্তী লোকজনের কথা, সমস্যা যতই হোক না কেন এমন নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করা ঠিক হয়নি।

Start a Conversation

Your email address will not be published. Required fields are marked *