খুশকি দুর করার উপায় সহজ উপায়

খুশকি চুলের ত্বকের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেন খুশকিকে সেবরিক ডার্মাটাইসিস বলা হয়। এটি ডার্মাটাইসিসের প্রাথমিক পর্যায়। Read In English

এই খুশকি PSORIASIS (সোরিয়াসিস) ও ATOPIC DERMATAITIS (এটোপিক ডার্মাটাইটিস) নামক এলার্জির কারনেও হয়ে থাকে। খুশকির কারনে চুলের গোড়া দূর্বল হয়ে পড়ে, চুল রুক্ষ হয়ে যায়। খুশকি এলার্জির কারনেও হয়ে থাকে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা খুব মারাত্মক হতে পারে চুলের জন্য। এর কারণে চুল ঝরে পড়ে অনেক। এমনিতেই শীতকালে চুল অনেক ঝরে পড়ে তাতে খুশকির কারনে আরও বৃদ্ধি পায় চুল পড়া।খুশকির কারনে মাথার ত্বকে সাদা রঙের আইশের মত বা খোসার মত দেখা যায়, যা দেখাতেও খারাপ লাগে। চুল অপরিষ্কার করে এবং সবসময় নোংরা রাখতে সাহায্য করে খুশকি। খুশকি  মাথার ত্বকে বা চুলের গায়ে থাকে। তবে কালো চুলে বেশি বোঝা যায়। খুশকির কারনে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং অনেক  চুলকায়। আবার এটি আরও বেশি চোখে পড়ে যখন মাথা থেকে  ঘাড়ে পড়ে। খুশকি হওয়ার জন্য মূলত ম্যালাসেজিয়া গ্লোবসা নামক এক ধরণের ফাংগাস দায়ী। যা চুলের ত্বক ও তেল খেয়ে বেচে থাকে।

আমেরিকান একাডেমি  অফ ডার্মালোজি এসোসিয়েশন এর তথ্য মতে, অনেকেরই মনে হয় চুল নোংরা থাকলে খুশকি হয় কিন্তু তা সত্য নয়। তবে নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করলে খুশকি বেড়ে যায়। খুশকির কারন এখনো সঠিক ভাবে জানা যায়নি তবে তার গবেষণা এখনো চলছে।

আবার ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও বলে যে নোংরার কারনেই চুলে খুশকি হয়ে থাকে। তবে মানসিক চাপ এবং ঠান্ডা আবহাওয়াতেও খুশকির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি কি দেখুন

১) যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত তারা সপ্তাহে ৫-৬ দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। যে শ্যাম্পু প্রতিনিয়ত ব্যবহার করা হয়। যদি সেই শ্যাম্পুতে কোন কাজ না হয় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শ্যাম্পু পরিবর্তন করে করে ব্যবহার করতে হবে।কারন মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে খুশকি বেশি হওয়ার সুযোগে থাকে।আর যাদের মাথার ত্বক শুষ্ক তারা সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যাবহার করলেই হবে কিন্তু  সেটাও প্রতিনিয়ত ব্যবহারযোগ্য শ্যাম্পু অথবা পরামর্শ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

২) এন্টি হিস্টামিন মেডিসিন খাওয়া। এটি এক ধরনের  এন্টিবায়োটিক ওষুধ। যা চুলকে খুশকি থেকে মুক্ত করে যদি সেটা এলার্জি ধরনের খুশকি হয়ে থাকে হয়ে থাকে।

৩)ব্রিটেনের জাতীয় সংস্থা সেবা বিভাগ NHS বলেন খুশকি প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে যে সবে 

  • জিংক পাইরিথিওন
  • সেলেনিয়াম সালফাইড
  • স্যালিসিলিক এসিড
  • কিটোকোনাডল বা কোল্টার

ইত্যাদি এইসব উপাদান থাকে। তবে সেটাও ফার্মাসিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।

৪) খুশকি ধুলাবালি, ময়লা এবং নোংরা থেকে বেশি হয় তাই বাইরে যাওয়ার সময় চুল ঢেকে যেতে হবে।

৫) সপ্তাহে একদিন হলেও অ্যালোভেরা জেল লাগানো উচিত। অ্যালোভেরা খুব উপকারী চুলের জন্য। আর অনেকটা কার্যকরী যা চুলের জন্য। চুলের গোড়াও শক্তও করে।

৬) শ্যাম্পু ব্যবহারের পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। কন্ডিশনার চুলের নোংরা, ধুলাবালি, ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

৭) সপ্তাহে একদিন এন্ট্রি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। এটি ব্যবহারে খুশকি ধীরে ধীরে কমে যায়।

৮) বেকিং সোডা বা বেসনের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে কয়েক মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুলের অনেক উপকার হয়।

৯) চুলে শ্যাম্পু করার পর ভেজা অবস্থায় টক দই লাগিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু বেশি সময় ধরে রাখা যাবে না অন্তত ১৫ মিনিট রাখলেই যথেষ্ট।

১০) চুলের স্টাইলের জন্য কখনো জেল বা মেডিসিন যুক্ত হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা উচিত না। এতে চুলে ধুলা জমে চুল নোংরা করে তখন খুশকি হওয়ার আশংকা অনেক বেশি।

১১) খাবার চার্টে অবশ্যই ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স,এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড এবং জিংক রাখা উচিত। কারন ভিটামিন ও জিংকের অভাবেও চুলে তৈলাক্ত হয়ে খুশকির সৃষ্টি করে।

১২) সবচেয়ে উত্তম এবং সহজ পদ্ধতি হলো নারিকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় দেয়া। লেবু খুব খুব খুব উপকারী চুলের জন্য। লেবুতে সাইট্রিক এসিড থাকে। প্রায় ২.২ pH এর প্রায় ৫% থেকে ৬% সাইট্রিক অ্যাসিড, যার কারণে এটি টক স্বাদযুক্ত হয়। লেবুতে ভিটামিন সি ও থাকে। যা চুলের জন্য খুব উপকারী। শুধুমাত্র লেবুর রসও চুলে লাগানো যায় তবে খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খুশকি থেকে মুক্ত থাকুন চুল সতেজ রাখুন।

Start a Conversation

Your email address will not be published. Required fields are marked *