ছোলার গুনাগুন সম্পর্কে অবাক হওয়ার মতো কিছু কথা

ছোলার গুন সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি না। যারা জানি তারা তো জানি কিন্তু দেখা যাক কতটুকু জানি আর‌ও জানা যায় কি না। আর যারা জানি না তারা জেনে নিই ছোলার উপকারিতা কি কি। Read in English

ছোলা সবার জন্য উপকারী হোক সেটা ছোট  বড় কিংবা বয়স্ক। অনেকে তো কাঁচা ছোলাও খেয়ে থাকেন খেতে ভাল লাগে তাই। নিরামিষ খাবারের মধ্যে ছোলা খুব উপকারী খাবার হিসেবে বলা যায়।  কারন এর মধ্যে প্রোটিন অনেক বেশি মাত্রার সাথে সাথে অন্যান্য অনেক উপাদান যেমন প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী ছোলায় আমিষ প্রায় ১৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ প্রায় ৬৫ গ্রাম, ফ্যাট এর পরিমাণ মাত্র ৫ গ্রাম,২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম,প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-বি এর ১ ও ২ রয়েছে। এছাড়াও ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন,খনিজ লবন, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম  ছাড়াও আরো অনেক উপাদান আছে।

কিন্তু এটা বুঝতে হবে যেকোন খাবারের ভাল গুন পেতে গেলে আগে সেই খাবারের নিয়ম আর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে যানা প্রয়োজন।

জেনে নেওয়া যাক ছোলার উপকার সম্পর্কে

১)  ছোলাকে বলা হয় কম্পলেক্স কার্ব, কারন কম্পলেক্স কার্ব এর গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সটা অনেক কম হয়। এইজন্য এটি খেলে রক্তে শর্করা হুট করে বৃদ্ধি হয় না, অস্থির ভাব দূর হয়। এজন্য ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য ছোলা খুবই উপকারী।

২) ছোলা শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। দীর্ঘক্ষন শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে। শুধু তাই ই নয় যৌন শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

৩) স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে। কারন প্রাকৃতিকভাবে ছোলা ওজন বাড়াতে খুবই কার্যকরী।

৪) ছোলায় দ্রবনীয় ও অদ্রবণীয় দু ধরনেরই খাদ্য আশ আছে।একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন প্রায় ৪০৬৯ মিলিগ্রাম ছোলা খায় হৃদরোগ থেকে মৃত্যুর ঝুকি ৪৯% কমে যায়  এবং রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। অস্ট্রেলিয়ান গবেষকদের মতে ছোলা অনেক অপ্রয়োজনীয় কলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে।

৫) হজম শক্তিতে বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে এবং পরিষ্কার পানিতে ছোলা সেদ্ধ করে সেই পানি খেলে বদহজম ও দূর হয়ে যায়।

৬) ব্রন বা মেছতার জন্য ছোলা খুব উপকারী।  নিয়ম করে যদি ছোলা ব্লেন্ড করে মুখে মাখা যায় তবে এই সব ব্রন বা মেছতা আস্তে আস্তে মিশে যাবে।

৭) কাচাঁ ছোলা আদার সাথে খেলে শরীরে আমিষ ও এন্টিবায়োটিক গঠন হয়।

৮) ছোলা খাদ্যনালীতে ক্ষতিকর জীবানু দূর করে ক্যান্সারের আশংকা কমায়।

৯) দাঁতের মাড়ি ফোলা কমাতে কাঁচা ছোলা  সাহায্য করে এবং কাঁচা ছোলা চিবিয়ে খেলে দাঁতের মাড়ি মজবুত করতেও সাহায্য করে।

১০) কাঁচা ছোলা ত্বকের মসৃণতা ও লাবণ্যময় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে এবং গায়ের কালচে ভাবও দূর করে।

১১) ছোলায় থাকা সালফার উপাদান, হাত  পায়ের জ্বালা পোড়া এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

১২) ছোলার ফলিক এসিড এজমা প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।

১৩) কাঁচা ছোলা জ্বর ভাল করার ক্ষমতাও রাখে

ছোলার গুনাগুন এখানেই শেষ নয়।এছাড়াও আরো অনেক অনেক প্রচুর গুণাগুণ রয়েছে ছোলার। তবে ছোলার উপকার জানলেই হবে না সঠিক নিয়ম না জেনে খেলে কোন লাভ নাই।  তাই নিয়মও জানা দরকার।

খাওয়ার নিয়ম

ছোলার পরিপূর্ণ পুষ্টি উপাদান পেতে চাইলে ছোলা কে সারা রাত পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কাঁচা ছোলা ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে। সাধারণত একজন মানুষের জন্য প্রতিদিন ২০/৩০ গ্রাম বা ১ মুঠো ছোলা খেলেই যথেষ্ট। তবে চাইলে একটু পুষ্টি গুনাগুন বৃদ্ধিতে বা পরিপূর্ণ করতে একটু আদাকুচি, একটু গোল মরিচ গুড়া এবং একটু লবন একত্রে মিশিয়ে খেলে ছোলা অনেক এনার্জিটিকও হয়ে যাবে।

Start a Conversation

Your email address will not be published. Required fields are marked *