শবে কদরের নামাজ পড়ার কোরআন ও হাদিস সম্মত নিয়ম
সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাছে পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই রমজান মাসে আমরা যে এবাদত করে থাকি তা আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম। এই রমজান মাসের মধ্যে একটি রাত যা হাজার বছরের চেয়েও উত্তম। আর সেই মর্যাদাপূর্ণ পবিত্র রাত হচ্ছে লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের রাত। কুরআন ও হাদীসে বলা হয়েছে অন্য সময় ১০০০ বছর ইবাদত করলে একজন মুসলমান ব্যক্তির জন্য যেসব পাওয়া যাবে লাইলাতুল কদরের রাতের ইবাদত করলে ততটুকু সওয়াব পাওয়া যাবে। Read in English
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ লাইলাতুল কদর বা শবে কদর অত্যন্ত মহিমান্বিত এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এ রাতে হাজার বছরের চেয়ে উত্তম। এই রাতে আল্লাহর কাছে কোন বান্দা ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা শবে কদরের নামাজ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। কিভাবে শবে কদরের নামাজ পড়বেন এবং কুরআন হাদীস সম্মত নিয়ম কি এ সম্পর্কে যা জানতে চেয়েছেন। তাদের জন্য আমরা আমাদের আজকের আলোচনায় শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম কুরআন ও হাদীস সম্মত নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম
শবে কদরের নামাজ দুই রাকাত করে চার রাকাত পড়তে হয়। অতঃপর যত ইচ্ছে এভাবে নামাজ পড়া যাবে। শবে কদরের নামাজ পড়া নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। তবে দুই রাকাত দুই রাকাত করে ধীর–স্থিরভাবে যতটা সম্ভব সময় নিয়ে ধীরে ধীরে নামাজ পড়া উত্তম। অনেকে বলে থাকেন শবে কদরের নামাজ প্রথম রাকাতে কদর সূরা এবং তিনবার ইখলাস পড়ে সালাত আদায় করতে হয়। তবে এরকম কোন হাদিস নেই। শবে কদরের নামাজ আপনি সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা মিলিয়ে দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতে পারবেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যতটা সম্ভব সুন্দর করে ধীর–স্থিরভাবে সালাত আদায় করায় সবথেকে বেশি উত্তম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অত্যন্ত সুন্দরভাবে ধীর–স্থিরভাবে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন।
শবে কদরের নামাজ পড়ার কোরান ও হাদীস সম্মত নিয়ম
রমজান মাসের শেষের দশটি রমজানের যে কোনরাত শবে কদরের রাত হতে পারে। সুতরাং আমাদের উচিত রমজান মাসের শেষের দশটি দিন ধীর–স্থিরভাবে বেশি বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করেন। শবে কদরের জন্য আলাদাভাবে কোন নামাজ নেই। তবে এশার নামাজের পর দুই দুই রাকাত করে ধীর–স্থিরভাবে যতটা সম্ভব গুছিয়ে সুন্দর করে সূরা তেলাওয়াত করে নামাজ পড়া উত্তম। এ নামাযের নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। আপনি চাইলে এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত দুই রাকাত করে সালাত আদায় করতে পারবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুন।
শবে কদরের নামাজের নিয়ত
শবে কদরের নামাজের জন্য আলাদা করে কোনো নিয়ত নেই আপনি চাইলে আল্লাহু আকবার বলে শবে কদরের নিয়ত করতে পারেন। তবে নিচের নিয়তটি করতে পারবেন
শবে কদর নামাজের নিয়ত আরবীতে: “নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা–হি তা‘আ–লা– রাক‘আতাই ছালা–তি লাইলাতুল কদর–নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা–জিহাতিল্ কা‘বাতিশ্ শারীফাতি আল্লা–হু আকবার”।
শবে কদর নামাজের বাংলা নিয়ত: “আমি ক্বেবলামূখী হয়ে আল্লাহ্ এর উদ্দেশ্যে শবে কদরের দু‘রাক‘আত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করলাম– আল্লাহু আকবার”।
শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের দোয়া ও আমল
শবে কদরের রাত হল রহমত পূর্ণ একটি রাত। রাতে আমল করার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। একজন মুসলিম যত বেশী আমল করবে আলো ততবেশি তাকে প্রদান করবে। এ রাত উপলক্ষে কমপক্ষে 100 বার দরুদ শরীফ সহ ছোট ছোট অনেক দোয়া রয়েছে যেগুলো পাঠ করা উচিত। শবে কদরের রাত আল্লাহর নিকট খুবই প্রিয় একটি রাত। এই রাতে আল্লাহর বেশি বেশি গুনোগান করা উচিত। এই রাত গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার রাত। কারণ এই রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন। হাজার বছরের চেয়েও উত্তম রাত হিসেবে শবে কদরের রাত কে অভিহিত করা হয়।
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর এর এর রাতে নিম্নোক্ত দোয়া গুলো পাঠ করতে হবে। এবং আল্লাহর নিকট বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।