রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন। সুন্দর একটি বিকেল কাটানোর জন্য সুন্দর জায়গা
রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন : রাজশাহী একদিকে শিক্ষানগরী অন্যদিকে শান্তিরও শহর। রাজশাহী তে এত বেশি শান্তি যে অন্য জায়গার মানুষও রাজশাহীতে বসবাস করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে অনেক। ছুটির দিনে সুন্দর ভাবে কাটানোর জন্য একটা পারফেক্ট জায়গা এই রাজশাহী । সবকিছুই কেমন জানি অসাধারণ রকমের ভাল। তবে এর মধ্যেও সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর একটা স্থানের নাম বলায় যায় রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন। যেখানে অনায়াসে চোখ বন্ধ করে বলা যাবে যে একটা সুন্দর বিকেল কাটানোর জন্য জায়গাটি অসাধারণ। রাজশাহীর কেন্দ্রে অবস্থিত একটা জায়গা। Read in English
সাগরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য আর বিশালতা উপভোগ করতে হলে সাগরপাড়ে যাওয়া সম্ভব না হলে ঘুরে আসা যায় এই পদ্মার পাড় থেকে। প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মার পাড় ঘেঁষে ঘুরে বেড়ানোর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা যেতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন জায়গাটা এত সুন্দর এত মায়াবী যে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। দেখা যায় প্রতিদিনই এই জায়গায় মানুষের প্রচন্ড ভীড় থাকে। কারন পরিবেশটা কেন তার সম্পূর্ণ ভালবাসা, সৌন্দর্য, মায়া সবকিছু মনে হয়ে ঢেলে দেই এই পদ্মায়। এখন বাচ্চাদের খেলার জন্যও অনেক অনেক খেলনা দিয়ে সাজিয়েছে রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন এই স্থান।

রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন
নদীর পাড়ে এইরকম একটা মন মাতানো জায়গায় বসে থাকতে কার না ভাল লাগে। যেখানে নদীর পানি আর আকাশের মিলন একসাথে ঘটে থাকে। আবার সূর্যাস্তটাও দেখতে অনেক ভালো লাগবে রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন এই জায়গায়। একদিক বসে নদীর বাতাস আর অন্যদিকে সূর্যাস্তের এমন অপরূপ দৃশ্য কার না ভাল লাগে। সবাই চাইবে এমন অসাধারণ দৃশ্য দেখতে, এমন অমূল্যবান সময় কাটাতে। শীতের সকাল কিংবা পড়ন্ত বিকেলে পদ্মাপাড়ের উন্মুক্ত পরিবেশ আর নয়নাভিরাম দৃশ্য আকৃষ্ট করছে জনগণকে।
এই দৃশ্য শুধু রাজশাহীর জনগনকে আকৃষ্ট করে তা নয় রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা পর্যটন বা দর্শনার্থীদেরও মন আকৃষ্ট করে। চাঁদনীরাতেও অনেক ভিড় থাকে এখানে।সূর্য কিংবা চাঁদের প্রতিবিম্ব যখন পানিতে পড়ে, তখন এক অসাধারণ দৃশ্যের অবতারণা হয় যা দেখতে চমৎকার ভাবে মনকে ছুয়ে দেয়। নদীর তীর ঘেঁষেই আবার কোথাও কোথাও রয়েছে মনোরম সবুজ মাঠ তবে এই সবুজ মাঠ শুধু ফাল্গুন চৈএতেই বেশি দেখা যায়। অনেকে আসেন এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
পদ্মার নদীর পাড়ে অবস্থিত রাজশাহী পদ্মা গার্ডেন। অসাধারণ একটা জায়গা যেখানে প্রতিদিন গেলেও হয়ত মন ভরবে না। কথায় বলে, সাগরপাড়ে দাঁড়ালে সমুদ্রের বিশালতায় নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হয়। তবে এখনও অত্র এলাকায় পর্যটক ও দর্শনার্থীবান্ধব বেশ কিছু সুযোগ–সুবিধার প্রয়োজন বলে মনে করেন আরো এক দর্শনার্থী তাহেরা কুসুম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, কোথাও বেড়াতে গেলে আশেপাশে খাবারের কোনো ভালো ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়। এখানে এখনও ভালো কোনো রেস্টুরেন্ট নেই।

এছাড়া বাঁধজুড়ে বেশ কয়েকটি বসার বেঞ্চ বানানো হয়েছে। যদিও তা পর্যাপ্ত নয়। এগুলো বাড়াতে হবে। নারী ও শিশুরা থাকলে কতক্ষণ আর দাঁড়িয়ে থাকা যায়? ছুটির দিন গুলোতে মানুষের চাপ বেশি থাকে। একই সঙ্গে পদ্মার কিনারা জুড়ে যদি ভালো আবাসিক হোটেল থাকে, তাহলে রাজশাহীর বাইরে থেকে যারা আসবেন, তারা রাতে থাকতে পারবেন। এমন কিছু পরিকল্পনা নিয়ে স্থানগুলো সাজানো হলে এখানে একটি ভালো পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে।
দর্শনার্থীদের এমন সব চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) তাদের সেবার পরিধি বাড়িয়ে দেন। এমনকি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বাংলা নিউজকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানি। তবে এর জন্য পাড়ের পুরো এলাকার মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি স্থানকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এমনকি এর জন্য এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এছাড়া এসব স্পটে যেন দর্শনার্থীরা সহজেই যাতায়াত করতে পারেন, সেই জন্য এর সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলো প্রশস্ত করা হচ্ছে যাতে কোন অসুবিধা না হয়। এছাড়া এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণেরও কথা ভেবে রাখা হয়েছে। আশা করছি, এসব কাজ হয়ে গেলে দর্শনার্থীরা আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন আর এখানে একটি পর্যটকবান্ধব ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। এমনকি বাংলাদেশের একটি অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবেও গন্য হবে।
এখানে বেড়াতে আসা অনেক দর্শনার্থীরা বলছেন, এমনিতেই দারুণ সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে রাজশাহীর পদ্মা নদীর পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। তবে আরও কিছু সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হলে এটিই হয়ে উঠতে পারে রাজশাহীর প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। ছুটির দিনে ছাড়াও একটা সুন্দর দিন সুন্দর বিকেল কাটানোর জন্য পারফেক্ট একটি জায়গা এই পদ্মা গার্ডেন।