রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি ?
রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান : পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর যার নাম রাজশাহী । বিভাগের সবচেয়ে বড় শহর রাজশাহী জেলাটি বিখ্যাত আম ও রেশমি বস্ত্রের জন্যে। এইখানে আম এবিং রেশম চাষ হয় অনেক। এই রাজশাহী শহরে রয়েছে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ বিখ্যাত মসজিদ, মন্দির ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। পদ্মার নদীর তীরে এই শহরে পর্যটকদের জন্য দর্শনের মতো অনেক স্থান রয়েছে। আমাদের আজকের আলোচনায় আমরা এমনি কিছু রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলো। Read in English
রাজশাহী কলেজ

বাংলাদেশের অন্যতম এবং শীর্ষ কলেজ রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী। প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থী রাজশাহী কলেজে ভর্তি হয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজশাহী সবার আগে এর পেছনে রয়েছে রাজশাহী কলেজ। এটি রাজশাহীর প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত । রাজশাহী জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৫ মিনিট এর পথ হাটলেই রাজশাহী কলেজ। এখানে ইন্টারমিডিয়েট থেকে অনার্স, ডিগ্রি, মাস্টার্স পর্যুন্ত পড়ানো হয়। রাজশাহী তে আসলে রাজশাহী কলেজ একবার ঘুরে আসতে পারেন । খুবই মনমুগ্ধকর । রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে রাজশাহী কলেজ এর নাম থাকবে না তা হয় না।
বরেন্দ্র জাদুঘর

রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলার কেন্দ্রে পদ্মা নদীর পাশেই বরেন্দ্র জাদুঘর অবস্থিত। চিড়িয়াখানা, জাদুঘর, বাগান এবং নির্জন প্রকৃতির এই সৌন্দর্য যেন মনকে ছুঁয়ে যাবে। মনকে নিয়ে সুখের এক অজানা রাজ্যে। এই জাদুঘরে পুরাতাত্ত্বিক জিনিসের সাথে সাথে আছে কৃত্রিম লেক ও পাহাড়। যেখানে দাড়ালে সূর্যাস্তের এক অপরুপ দৃশ্য। জাদুঘরের পাশেই এবং পদ্মা নদীর সাথেই লাগানো আছে হযরত শাহ মখদুম (রা)-এর মাজার। তিনি ছিলেন একজন ইয়েমেন-এর শাসক। তিনি এখানে এসে সমাজের অনেক কুসংস্কার দূর করেন, শিক্ষা দেন, ইসলামের প্রতিষ্ঠা করেন এবং মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেন। রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে প্রাচিনতম স্থান এটি।
শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা

রাজশাহী জেলার কেন্দ্রে টি-বাধের পাশে অবস্থিত শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি স্থান
জানা গেছে যে, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়দৌড় বা রেস খেলার প্রচলন করে। তখন খেলা দেখা ও বাজি ধরায় প্রচণ্ড উত্তেজনা সৃষ্টি হত। এমনকি শহরাঞ্চলেই ঘোড়দৌড় মাঠ বা রেসকোর্স ছিল। এই রেসের নেশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন খেলা দেখতে। অনেকে এ খেলায় সর্বস্বান্তও হয়েছেন। কার্যত আয়োজকরাই বেশিরভাগ লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়ে। এখন এই রেসকোর্স ময়দান টি ‘রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা’ নামে প্রচলিত।
সাফিনা পার্ক

রাজশাহী জেলাধীন গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিত সাফিনা পার্কের যাত্রা শুরু হয়ে থাকে। বলা যায়, ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দিগরাম খেঁজুরতলায় ৪০ বিঘা জমির উপর সাফিনা পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এই পার্কের ভেতরে দুইটি লেকে দর্শনার্থীদের পানিতে চলাচলের জন্য নৌকা রয়েছে। আবার পার্কের সমস্ত এলাকা জুড়ে ফুলের বাগানের সঙ্গে রয়েছে কৃত্রিম উপায়ে তৈরিকৃত বিভিন্ন জীবজন্তু। যা দেখলে মনে হবে বাস্তব জীবিত জীবজন্তু।
পুঠিয়া রাজবাড়ি

রাজশাহী অঞ্চলের আর একটি ঐতিহাসিক পর্যটন স্থান হচ্ছে পুঠিয়া প্রাসাদ। এটি রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় অবস্থিত। এই স্মৃতি স্তম্ভটির আরো একটি নাম হচ্ছে গোবিন্দ মন্দির। এখানের ভবন গুলোর উভয় পাশেই দীঘি আছে। দীঘি দিয়ে এই প্রাসাদের চারপাশ ঘেরা। তবে বর্তমানে প্রধান ভবনে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে বিখ্যাত সাধক শাহ দেউলা এবং আরো অনেক সুফি সাধকের কবর আছে।
পুঠিয়া শিব মন্দির

রাজশাহী শহর থেকে ০৮ হতে ১৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং উত্তর পশ্চিমে দেওপাড়া, কুমারপুর ও বিজয়নগরে এর অবস্থান। এটি পুঠিয়া প্রাসাদের পাশেই অবস্থিত।
রাজশাহীর যে স্থানটি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশী আকৃষ্ট করবে সেটি হল নিঃসন্দেহে পুঠিয়া রাজবাড়ি। রাজা পিতাম্বর ছিলেন মূলত পুঠিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ষষ্ঠাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পুঠিয়ায় রাজধানী স্থাপন করেন। তারপরে তিনি একাধিক সুদৃশ্য ইমারত নির্মাণসহ জলাশয় খনন করেন। রাণী ভূবনময়ীর জন্যে বিশাল একটি জলাশয়ের সম্মুখে ভুবনেশ্বর শিবমন্দির নির্মাণ করেন (১৮২৩-১৮৩০)। এটি পঞ্চরত্ন শিবমন্দির নামেও খ্যাত। বাংলাদেশে বিশালাকারের ও বহু গুচ্ছচূড়া বিশিষ্ট শিবমন্দিরগুলোর মধ্যে পুঠিয়ার পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরটি স্থাপত্যশৈলীতে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে। রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি
হাওয়াখানা

ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কের তারাপুর মোড় হতে ১ কি.মি. দক্ষিণে তারাপুর গ্রামে হাওয়াখানা অবস্থিত। হাওয়াখানার চারপাশে রয়েছে শুধু দিঘী। এটি একটি সুন্দর তিনতলা ভবন।পানির মধ্যে ১ম তলা রয়েছে। পানির উপরে রয়েছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা। পুঠিয়ার রাজাগণ গ্রীষ্মকালে বাতাসের জন্য হাওয়খানায় শরীর ও মন ঠাণ্ডা করতেন।
গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ি

রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি হলো গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ি। রাজশাহী জেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী গোয়ালকান্দি জমিদারবাড়ির জমিদার ছিলেন জমিদার কংস নারায়ন। অনুমান করে বলা যায় আনুমানিক ১৯৪৭ সালের দিকে এদেশের জমি-জমা বিনিময় প্রথার মাধ্যমে বিনিময় করে ভারত চলে গেছেন এই জমিদার। সেই সুবাদে আজও ওই জমিদার বাড়ি অমনি আছে এবং অনেক পর্যটক আসেন এই জমিদার বাড়ি দেখতে
সরমংলা ইকোপার্ক

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিত সরমংলা ইকো পার্কটি। ২০০৩ সালের দিকে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে গোদাগাড়ী উপজেলার নিত্যনন্দপুর থেকে হরিশংকরপুর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার খাঁড়ি খনন করা হয়েছিল। খননের পরে খাঁড়ির দুই পাড়ে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করা হয়।