স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধির অজানা কিছু কৌশল : স্মার্টফোন ব্যবহারকারী সকলের মনে একটি বিষয় সবসময় কড়া নাড়ে। আর তা হচ্ছে ব্যাটারি লেভেল। অনেকে আছেন যারা ব্যাটারির চার্জ ফুরানোর ভয়ে ফোনের ব্রাইটনেস এতটা কমিয়ে রাখেন যে স্কিনে কিছু দেখায় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এতকিছু করা হয় শুধুমাত্র একটু বেশি সময় ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়ার আশায়। এছাড়াও আরো অনেক পদ্ধতি বা কৌশল রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে। তো চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনার ব্যাটারি ব্যাকআপ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে। Read in English
নেটওয়ার্ক
দুর্বল নেটওয়ার্ক পরিষেবা ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ এর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যেসব স্থানে নেটওয়ার্ক আপনার ফোনে নেটওয়ার্ক সামর্থের থেকে খারাপ সেসব স্থানে ইন্টারনেট ও ভয়েস কল সেবা ব্যবহারে ব্যাটারির শক্তি অতিরিক্ত পরিমাণে বেশি ব্যবহৃত হয়। কারণ এটি বারবার রিকানেক্ট হয় যদি আপনার ফোনের চার্জ কম থাকে তবে এসব জায়গায় ফোনের ফ্লাইট মোড চালু করে রাখলে ব্যাটারি বেঁচে যাবে। যদিও ফ্লাইট মোড চালু করলে ফোনের নেটওয়ার্ক একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফলে এই অবস্থায় আপনার ফোনে কোন কল আসবে না এবং ফোনের ডাটা ব্যবহার করা যাবে না। আপনার যখন দরকার হবে তখন ফ্লাইট মোড বন্ধ করলে আবার ফোনে নেটওয়ার্ক চলে আসবে অবশ্য ফ্লাইট মোডে ফোনের ওয়াইফাই কাজ করে।
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায় ( Online Earning Way)
নোটিফিকেশন
আপনার ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ হয়তো আপনাকে বিভিন্ন কারণে নোটিফিকেশন পাঠায়। ফেসবুক কমেন্ট মেসেঞ্জার মেসেজ ইমন মিসকল প্রভৃতি নোটিফিকেশনের কারণে আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জ খরচ হয়। এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর নতুন বার্তা দেখানোর জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড অটোমেটিক রিফ্রেশ হতে থাকে। তাই আপনি যদি ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পেতে চান তাহলে ফোনের এসব অ্যাপে নোটিফিকেশন সেটিং এ গিয়ে যত কম সম্ভব নোটিফিকেশন পাওয়ার ব্যবস্থা করে রাখুন।
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ
ফেসবুক স্কাইপ মেসেঞ্জার ইমু হোয়াটসঅ্যাপ প্রভৃতি অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে আপনি যদি এসব এর নোটিফিকেশন না পেতে চান তাহলে এগুলোর অটোস্টার্ট পারমিশন বন্ধ করে রাখতে পারেন
জিপিএস ব্লুটুথ ওয়াইফাই
ব্লুটুথ বা জিপিএস এর মত যে কোন সার্ভিস চালু রাখলে তা আপনার ফোনের ব্যাটারির শক্তি ব্যবহার করে। সুতরাং অপ্রয়োজনীয়ভাবে কখনোই জিপিএস ব্লুটুথ ওয়াইফাই চালু রাখবেন না।
ফটোগ্রাফি
আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন ছবি তুলতে এবং ভিডিও রেকর্ড করতে কি পরিমান চার্জ এর প্রয়োজন হয়। ছবি তুললে বিশেষত ভিডিও করলে ক্যামেরার কাজের জন্য অনেক পরিমান চার্জ দরকার হয় এ সময় আপনি ফোনের অন্য সকল সার্ভিস বন্ধ করে শুধুমাত্র ছবি বা ভিডিও করার দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। এতে অন্তত কিছুটা হলেও ব্যাটারি সাশ্রয় হবে। আর অপ্রয়োজনে প্লাস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
জিপিএস এর কৌশল ব্যবহার
আপনি চলাচলের সময় জিপিএস ব্যবহার করতেই পারেন। কিন্তু ফেসবুক টুইটার হোয়াটসঅ্যাপে সব মেয়ে শুধু–শুধু জিপিএস ব্যবহার দরকার নেই। এমন ব্যবহারে আপনার ব্যাটারি অতিরিক্ত শক্তি খরচ হয় ফলে আপনি ব্যাটারি ব্যাকআপ পান না। কোনটিকে জন্য এটি পরিমিত ব্যবহার করুন কোথাও যেতে চাইলে সেখানকার গুগল ম্যাপ এটা আগে থেকেই ডাউনলোড করে নিন পরে সেখানে গিয়ে অফলাইনে ব্যবহার করতে পারেন এতে নেটওয়ার্কিং এর জন্য শক্তি ব্যয় হবে না।
স্ক্রীন ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ
স্কিনে অটো ব্রাইটনেস ফিচার বন্ধ রাখুন এটি চালু থাকলে ফোনের সেন্সর সবসময় কাজ করে আর আপনার চারপাশের আলো অনুযায়ী স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কম বেশি হয়। এতে অতিরিক্ত ব্যাটারির শক্তি খরচ হয়। এসএমএস এর চেয়ে বরং নিজেই একটা নির্দিষ্ট স্ক্রীন ব্রাইটনেস লেভেল নির্ধারণ করে নিন প্রয়োজনে কিছুক্ষণ পর আবার পরিবর্তন করুন।
গোপনে গোপনে মেয়েরা যে ১০টি জিনিস সবচেয়ে বেশি সার্চ করেন
লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেট
ফোনের লাইভ ওয়ালপেপার সাধারণ ওয়ালপেপার এর তুলনায় বেশি চার্জ খরচ করে। সুতরাং ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি চাইলে লাইভ ওয়ালপেপার ব্যবহার বন্ধ করুন। এবং আপনার ফোন যদি সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয় সে ক্ষেত্রে ফোনে ব্ল্যাক ওয়ালপেপার ব্যবহার করুন। তাহলে তুলনামূলক বেশি চার্জ ব্যাকআপ পাবেন। আবার বিভিন্ন উইজেট যেমন আবহাওয়া ইমেইল নিউজ প্রভৃতি যেগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর আপডেট হয় সেগুলো ব্যবহার করলে তা ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধির জন্য উপকারী হবে।
অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা স্থান
অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা এই ফোনের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। 15 ডিগ্রী সেলসিয়াস হচ্ছে মোবাইলের ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি হলে সেটি কর্মক্ষমতা হারাবে এক গবেষণায় দেখা গেছে 25 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কোন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি রাখা হলে প্রতিটি 20% ধারণক্ষমতা হারাবে। আর সর্বোচ্চ 40 থেকে 50 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত ব্যাটারিটি তাৎক্ষণিক ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকবে।
সফটওয়্যার আপডেট
আপনার ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপস আপডেট রাখুন কেননা ডেভলপাররা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে অ্যাপ্লিকেশন ও ওএস আরো বেশি ব্যবহার বান্ধব করে তোলার। সুতরাং আপডেট সফটওয়্যার ব্যাটারির জন্য ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
টুজি/থ্রিজি/ফোরজি
থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক এর ফোন ব্যবহার করলে তার টুজি নেটওয়ার্ক এর চেয়ে বেশি ব্যাটারির শক্তি খরচ করে। যদিও টুজি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট গতি কম থাকে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ভয়েস মান কিছুটা কম হয় তাই আপনি চাইলে এই সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে শুধুমাত্র বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়ার জন্য টুজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন। ফোনে নেটওয়ার্ক সেটিং এ গিয়ে 2g 3g 4g নেটওয়ার্ক বাছাই করা যাবে।
মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার সঠিক নিয়ম জানুন
ভাইব্রেশন
ফোনের ভাইব্রেশন ফিচারটির জন্য মোবাইলের মধ্যে একটি ছোট মটর বসানো থাকে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো পরিমাণ চার্জ খরচ করে। সুতরাং টাচ ও অন্যান্য ইফেক্ট এর ক্ষেত্রে ভাইব্রেশন বন্ধ করে রাখুন। মনে রাখবেন ফোন কলের ক্ষেত্রে ভাইব্রেশন বন্ধ করলে চলতিপথে সেটি আপনার জন্য অসুবিধার কারণ হতে পারে সুতরাং কখন ভাইব্রেশন থাকবে আর কখন থাকবে না সেটিও আপনাকে ঠিক করতে হবে।
পাওয়ার সেভিং মোড
প্রত্যেকটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি সেভিং বা পাওয়ার সেভিং মোড থাকে আইফোন এর ক্ষেত্রে এটাকে বলা হয় লো পাওয়ার মুড। এই মুহূর্তগুলো ব্যবহার করলে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ অধিকাংশই বন্ধ থাকে। স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমে যায়।
আমাদের এই আলোচনাটি সম্পূর্ন পড়লে আপনি স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধির অজানা কিছু কৌশল সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ মতো প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।