রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

পদ্মা নদীর ধার ঘেঁষে গড়ে ওঠা রাজশাহী শহর। প্রাচীন এই শহরটি বিভিন্ন ঐতিহ্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে ভরপুর। রাজশাহী শহরের শিক্ষাব্যবস্থা ও তেমনি উন্নত। এ শহরে রয়েছে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। আমাদের আজকের আলোচনায় আমরা জানবো রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ। সুতরাং আমাদের আলোচনাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জানুন রাজশাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ সম্পর্কে Read in English

রাজশাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

  • বাঘা মসজিদ
  • কিসমত মারিয়া মসজিদ এবং বিবির ঘর
  • বড় আহ্নিক মন্দির, পুঠিয়া
  • হাওয়াখানা, পুঠিয়া
  • পুঠিয়া রাজবাড়ি
  • গোপাল মন্দির, পুঠিয়া
  • ছোট আহ্নিক মন্দির, পুঠিয়া
  • বড় শিব মন্দির, পুঠিয়া
  • ছোট গোবিন্দ মন্দির, পুঠিয়া
  • জগদ্ধাত্রী মন্দির
  • কৃষ্ণপুর গোবিন্দ মন্দির
  • কৃষ্ণপুর শিব মন্দির
  • কেষ্ট রথ মন্দির
  • দোল মন্দির, পুঠিয়া
  • পঞ্চরত্ন মন্দির
  • ছোট শিব মন্দির, পুঠিয়া
  • বিহরাইল ঢিবি
  • ধানোরা ঢিবি
  • উত্তর বাড়ি ঢিবি এবং মকরমা ঢিবি
  • দেওপাড়া দিঘি ও দরগা
  • কুমারপুর টিভি (আলি কুলি বেগ)
  • প্রাচীন দীঘি
রাজশাহী জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

রাজশাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলির সংক্ষিপ্ত আলোচনা

এ পর্যায়ে আমরা রাজশাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন গুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দিব। চলুন আলোচনা করি।

বাঘা মসজিদ

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

বাঘা মসজিদ রাজশাহী জেলা সদর হতে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। মসজিদটি ১৫২৩ থেকে ১৫২৪ সালে হোসেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নুসরাত শাহ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে মসজিদের সংস্কার করা হয় এবং মসজিদের গম্বুজ গুলো ভেঙ্গে গেলে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদের নতুন করে ছাজ নির্মাণ করা হয় ১৮৯৭ সালে‌। মসজিদটিতে ১০ টি গম্বুজ রয়েছে এবং ভিতরে রয়েছে ৬টি স্তম্ভ।

কিসমত মারিয়া মসজিদ

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

কিসমত মারিয়া মসজিদ রাজশাহী শহরের দুর্গাপুর উপজেলায় মারিয়া গ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশ একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটি আনুমানিক ১৫০০ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত হলেও আজ পর্যন্ত এর কোন রক্ষাণাবেক্ষণ বা সংস্করনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমবাগান আর ফসলের ক্ষেত বেষ্টিত এ মসজিদটি সম্পর্কে গ্রামের জনগণের মধ্যে অনেক কিংবদন্তি কাহিনী প্রচলিত আছে।

বড় আহ্নিক মন্দির পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

বড় আহ্নিক মন্দির পুঠিয়া রাজশাহী জেলা শহর হতে ৩২ কিলোমিটার উত্তরপূর্বদিকে ঢাকারাজশাহী মহাসড়ক এর পাশেই অবস্থিত। এটি পুঠিয়া মন্দির চত্বর এর সর্ব দক্ষিনে অবস্থিত একটি মন্দির। এর ঠিক উত্তর পাশে ছোট গোবিন্দ মন্দির অবস্থিত। পুঠিয়ার রাজারা এটি নির্মাণ করেছিলেন।

হাওয়াখানা পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

হাওয়াখানা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। পুঠিয়া উপজেলা সদরের রাস্তা থেকে তিন কিলোমিটার এবং পুঠিয়া বাজার থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে তারাপুর গ্রামে হাওয়াখানা টি অবস্থিত। একটি বিশাল পুকুর এর মধ্যবর্তী স্থানে এই দ্বিতল ভবনটি অবস্থান করছে। পুঠিয়ার বিখ্যাত চা রানীবাজার হাওয়াখানা কি ঐতিহাসিক পুঠিয়ার ১৭টি পুরকীতির একটি।

পুঠিয়া রাজবাড়ি

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

পুঠিয়া রাজবাড়ি বা পাচানি জমিদার বাড়ি হচ্ছে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবীর বাসভবন। বাংলার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের মধ্যে রাজশাহী পুঠিয়া রাজবাড়ি অন্যতম ১৮৯৫ সালে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবী আকর্ষণীয় ইন্দোইউরোপীয় স্থাপনা রীতিতে আয়তাকার তল এই রাজবাড়ীটি নির্মাণ করেন।

মহারানী হেমন্ত কুমারীর পুঠিয়া রাজবাড়ি সম্পর্কে কিছু কথা

গোপাল মন্দির, পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

গোপাল মন্দির রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন মন্দির। রাজশাহী জেলা শহর হতে ৩২ কিলোমিটার উত্তরপূর্বদিকে পুঠিয়া রাজবাড়ি বিশাল চত্বরের বেশ কয়েকটি নজরকাড়া প্রাচীন মন্দিরের মধ্যে এটি একটি। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা গুলোর একটি। এটি রাধাকান্ত মন্দির হিসেবেও পরিচিত।

ছোট আহ্নিক মন্দির, পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

ছোট আহ্নিক মন্দির পুঠিয়া রাজবাড়ি সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে উত্তর দক্ষিণ দিকে লম্বালম্বিভাবে অবস্থিত একটি মন্দির। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রেম নারায়ন এ মন্দিরটি নির্মাণ করেছেন বলে জানা যায়।

বড় শিব মন্দির, পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

বড় শিব মন্দির পুঠিয়া রাজবাড়ি ৬টি মন্দিরের মধ্যে অন্যতম একটি। গোবিন্দ মন্দির পুঠিয়া রাজপরিবারের তত্ত্বাবধায়নে রানী ভূবনমোহন দেবী এই মন্দিরটি ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ভুবনমী দেবী নাম অনুসারে একে ভুবনেশ্বর মন্দির বলা হয়। বর্তমান যুগেও এই মন্দিরে নিয়মিত পূজা হয়।

ছোট গোবিন্দ মন্দির, পুঠিয়া

ছোট গোবিন্দ মন্দির রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন মন্দির। চারানী মন্দির চত্বরে গোপাল মন্দির এবং বড় আহ্নিক মন্দিরের পাশে এর অবস্থান। বর্তমানে এই মন্দিরটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত স্থাপনা গুলোর মধ্যে একটি।

জগদ্ধাত্রী মন্দির

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

জগদ্ধাত্রী মন্দির বাংলাদেশ রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা এটি মূলত রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার অন্তর্গত এবং বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায় ( Online Earning Way)

কৃষ্ণপুর গোবিন্দ মন্দির, পুঠিয়া

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

কৃষ্ণপুর গোবিন্দ মন্দির পুঠিয়া রাজশাহী জেলার অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। স্থানীয়ভাবে এটিকে সালামের মঠ নামেও ডাকা হয়। পুঠিয়া বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমদিকে খোলা মাঠের ভিতরে একটি ছোট্ট মন্দির অবস্থিত কৃষ্ণপুর গোবিন্দ মন্দির বলা হয়।

পঞ্চরত্ন গোবিন্দ মন্দির

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

পঞ্চরত্ন গোবিন্দ মন্দির পুঠিয়া রাজবাড়ি মন্দিরের মধ্যে সর্ব নিকটতম মন্দির। এই মন্দিরের ১৮২৩ থেকে ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে এর মধ্যবর্তী সময়ে রানী ভুবনময়ী দেবী কর্তৃক নির্মিত হয়।

ধানোরা ঢিবি

রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ

ধানোরা ঢিবি রাজশাহী বিভাগের তানোর উপজেলার মাদারীপুরের একটি প্রাচীন নিদর্শন। রাজশাহী শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তানোর বাস স্ট্যান্ড থেকে ৪.৭ কিলোমিটার উত্তরে মাদারীপুর বাজার অবস্থিত পশ্চিম পাশে আরো এক কিলোমিটার গেলে ধানোরা ঢিবি পাওয়া যাবে।

এরকম আরো কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে রাজশাহী জেলা তে।

আমরা আমাদের আজকের আলোচনায় দেখিয়েছি রাজশাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর নাম সমূহ। এছাড়াও আমরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করেছি। আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে আশা করি সহজ একটি ধারণা পাবেন। তাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Start a Conversation

Your email address will not be published. Required fields are marked *