নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষায় আলাদা বিভাগ থাকছে না। বর্তমান সময়ে নবম শ্রেণীতে ওঠা মাত্রই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান, মানবিক অথবা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ গ্রহণ করতে হয়। এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী পড়াশোনা চলতে থাকে। তবে শিক্ষামন্ত্রণালয় নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিকে বিভাগ পরিবর্তনের বিষয়টি বাদ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের একই বিষয়ে পড়তে হবে। নবম ও দশম শ্রেণীতে আর কোন বিভাগ থাকছে না। সকল শিক্ষার্থীকে অভিন্ন দশটি বিষয়ে পড়তে হবে। এবং আগামী বছর থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি হবে শুক্র এবং শনিবার দুই দিন। Read in English
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ সচিবালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবির কার্যালয়ে এ সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে ৬২ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে। এবং মার্চ থেকে আরো ১০০ টি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম শুরুর সময়
এনসিটিবি এর সূত্রে জানা গেছে যে, এই বছর নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পর ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে, ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বিশাল পরিবর্তন আসতে চলেছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের শিখন সময় অনুযায়ী নির্ধারিত নম্বর প্রদান করতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির পূর্ব পর্যন্ত কোন প্রকার পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ না করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা এবং ধারাবাহিক শিখুন কার্যক্রম দুটি বলবৎ থাকবে।
বাদ পড়ছে বিভাগ পরিবর্তন
নতুন প্রকাশিত এই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বিভাগ বিভাজন হবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে দশটি অভিন্ন বিষয় পড়ানো হবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রী উল্লেখ করেন যে নতুন শিক্ষাক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন যেহেতু ২০২৪ সাল থেকে নবম শ্রেণীর নতুন বই তৈরি হবে তাই সেই বছর থেকে বিজ্ঞান মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা আর থাকবে না। নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষার্থীদের নতুন এক অভিজ্ঞতা হবে বলে জানান এনসিটিবির কর্মকর্তারা। এই শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের অর্জিত অভিজ্ঞতা কিভাবে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে সে বিষয়েও শেখানো হবে।
প্রাক প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন শিক্ষাক্রম শুরুর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে পাঠদান এখনই শুরু হচ্ছে না। আশা করা যায় ১ মার্চ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হবে এবং তখনই নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের একাগ্রতা ও সমাজের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এই তিনটি পর্যায় মিলে গেলে একটি জাতির উন্নয়ন আর কেউ আটকাতে পারবেনা।