আজকের দুনিয়ায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিই বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট ও আশঙ্কা। শিল্পায়নের শুরু ফসল জালানির ব্যাপক ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে পশ্চিমা দুনিয়া বিশেষ প্রযুক্তি, সভ্যতা ও মূল্যবোধকেই বদলে দেয়নি, সেই সাথে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। শিল্পায়ন ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বরাণিজ্য বাংলাদেশের মত দেশগুলোর বাস্তব অর্থনৈতিক অবস্থায় একেবারে নগণ্য হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও ক্ষয়-ক্ষতির তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থান করছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের শতশত নদী এরই মধ্যে শুকিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের প্রধান নদীগুলোর অস্তিত্বের সাথে বাংলাদেশের ভৌগলিক ও ডেমোখাফিক অস্তিত, নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, “এ হলে, এদেশের কৃষি, শিল্পায়ন, নগরায়ন, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে চাইলে নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে বিশ্বের পলিমাটির দ্বারা আমাদের এই সমতল ভূমি গড়ে তোলার পাশাপাশি একে সুজলা-সুফলা করে তুলেছে এই নদীগুলো হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত নদীগুলোর বয়ে চলার বিস্তীর্ণ পথ এক অর্থাৎ ভূ-প্রাকৃতিক ব্যবস্থার অংশ। Read in English
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে ও ঐতিহাসিক বাস্তবতায় ব্রিটিশ উপনিবেশোত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোর মানচিত্র বিভাজিত হয়ে পাল্টে পেলেও অভিন্ন নদীর অধিকার সবার সমান। শুধু রাজনৈতিক সীমারেখা ও মানচিত্রের ভিন্নতার কারনে আমাদের নদীগুলোর উজানে একতরফা পানি প্রত্যাহারের স্থানভেদে শিকার হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে এ ধবংসাত্মক কর্মকান্ড বিশ্বের আর কোথাও কখনো ঘটেছে কিনা আমাদের তা জানা নেই। উত্তরাঞ্চলের দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্প সেখানকার কৃষকদের জন্য বহু যুগের স্বপ্ন ছিল। এই স্বপ্নের সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নের পর ভারত উজানে একটি বাঁধ নির্মাণ করে এদেশের কোটি মানুষের স্বপ্ন নস্যাৎ র দিয়েছে করে গত দশক থেকেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারিত হচ্ছে। বিশ্বের উচ্চ ফলের হিমালয়ের আইচ ক্যাপগুলো দ্রুত স্কুলে যাওয়ায় আগামী দুই দশকে আমাদের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়ে গেলে আমাদের উপকূলীয় বিশাল নিম্নভূমি নোনা পানিতে প্লাবিত হয়ে যাবে। হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি সাগরের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে নিম্নাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে।
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশ
আমাদের সীমিত কৃষিজমি, শিল্প এবং নগরায়নের এ সীমাবদ্ধতার মধ্যে এই বিশাল জনসংখ্যার জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের সম্পৃক্ত নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। এটি শ্রেয় আশঙ্কা এই আশঙ্কার পেছনে বিজ্ঞানী ও জলবায়ু গবেষকদের দীর্ঘদিনের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। গত চার দশকের বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো বেশির ভাগই ব্যাপকহারে তাদের নাব্যতা হারিয়েছে। উজানে পানি প্রত্যাহারের কারণে নদীগুলো স্রোতহীন হয়ে পড়ায় উজান থেকে আনিত পলিমাটির সমুদ্র অববাহিকা পর্যন্ত বয়ে নিতে পারছে না বলেই নদীগুলোতে চর পড়ে নাব্যতা বা পানি ধারণ ক্ষমতা হারাচ্ছে।
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আমাদের নদীগুলো প্রতিবছরই ডেজিং এর মাধ্যমে নাব্যতা রাখার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কখনোই বড় ধরনের ডেজিং পরিকল্পনা গ্রহণ করা বা বাস্তবায়ন হয়নি। এদেশের এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মানুষ নদী ভরাট করে দখলের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। ঢাকার চারপাশের নদীগুলো থেকে শুরু করে সারা দেশেই চলছে এই দখল প্রক্রিয়া। কিছুলোক যখন নদী দখল করছে, তখন অন্যরা নদীকে ভিন্ন পন্থায় হত্যা করতে শুরু করেছিল আরো আগে থেকেই। শিল্পকারখানার, টেনারির বর্জ্য, ডাইং কারখানার তরল বর্জ্য্য শহরের নাগরিক রাসায়নিক বর্জ্য, বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলে একেকটি নদীকে বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত শহরে পরিণত করা হয়েছে। পশ্চিমা শিল্পোন্নয়নের এই অপরিনামদর্শী আচরণের ফলভোগ করতে হচ্ছে। এখন অর্থাৎ বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষকে। ফসল জালানি বেহিসাবি ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট কার্বন-ডাই-অক্সাইঙ্গ্যাসগুলো একদিকে ও ব-দ্বীপ পানিবাবিকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য নয়।
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বায়ুমণ্ডল দূষনের ফল
বায়ুমণ্ডল ওজন স্তর ক্ষয় করার মাধ্যমে প্রাণীজগতের জন্য মারাত্মক সব রোগ সংক্রামিত হচ্ছে। শুধু ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতি ৮ সেকেন্ডে ১ জন লোক মারা যায়। একটি গবেষণায় বিশ্বে শুধু ডায়াবেটিসের কারণে বছরে অর্ধ-কোটিলোক মারা যা গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের চেয়েও বড় প্রাণঘাতি অপরিকল্পিত ভূমি ব্যবস্থাপনা-কৃষি ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, দূষণ ও পরিবেশ দূষণের আমরা সম্মিলিতভাবে আত্ম-হত্যারপথ বেছে নিচ্ছি। সম্প্রতি এক গবেষনায় জরিপে জানা যায়, বাংলাদেশের মানুষের রক্তের বা বিষের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ অংকে থেকে ৭০ গুন পর্যন্ত বেশি। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, আমরা শুধু পরিবেশ দূষণ করছি না, প্রকারাতে আমাদের রক্তের গৌণ কার্যকারিতার মধ্যেও বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছি। আগামী প্রজন্মের মধ্যেও এই বিষ উত্তরাধিকার সূত্রে ঢুকে যাচ্ছে। কোটি মানুষের রক্তের বিষ ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা এবং নানাবিধ উপসর্গ কোন রকমের বেঁচে থাকার সংখ্যমে লিপ্ত হওয়ার পথ খুঁজছি।
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের অবস্থা
কোটি মানুষের অসুস্থতার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কোন জাতি সত্যিকার অর্থে সভ্যতা ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে না। সুন্দর ও সুখি জীবন যাপনের জন্য বিস্তবৈভবের মালিক হওয়ার প্রয়োজন নেই। জমি দল, নদী দল, শিশুদের খেলার মাঠ দখল, সরকারি খাস জমি, পুকুর জলাশয়, পাক দখল করে এক শ্রেনির ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তি রাতারাতি আরো বড়লোক, কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ায় বাংলাদেশেকে আজকে বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। যে দেশের মানুষ যুদ্ধ করে লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারেন, সে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে না। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজের শক্তি ও শুভ বুদ্ধির ওপর আস্থা রেখে আমাদেরকে সব বাধা পেরিয়ে একটি সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সঠিক কাজ করে যেতে হবে। তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের সুনাম অক্ষুর থাকবে। আমরা অবশ্যই আশাবাদী।