Category: আন্তর্জাতিক

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বর্তমান বিশ্বের পরিস্থিতি

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বর্তমান বিশ্বের পরিস্থিতি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তৃতীয় দিনে এসে কিয়েভের মিত্রদের টনক নড়েছে আগের দুইদিনের তুলনায় বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ। ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধের অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠিয়েছে ফ্রান্স। এখন সেগুলো পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। আর ইউক্রেনে অনুদান ও ত্রাণ দেয়াও শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এমতাবস্থায় ইউক্রেনের জন্য আবারও আশার বাণী শোনালেন ব্রিটেনের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক মন্ত্রী জেমস হিপি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাজ্য এবং অন্য ২৫টি দেশ আরও ‘মানবিক বা প্রাণঘাতী সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। বিবিসি রেডিও ফোরের টুডে প্রোগ্রামকে হিপি বলেন, কীভাবে সেই সামরিক সহায়তা দেয়া হবে এবং তা “ইউক্রেনের হাতে তুলে দেয়া হবে সেটি ওই দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে ব্রিটেন। তবে এর চেয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি। Read in English

তিনি বলেন, ক্রেমলিন সম্ভবত ইউক্রেনের কঠোর প্রতিরোধ নিয়ে ভেবে দেখবে। এদিকে সুইফট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ট্রান্সফার সিস্টেম থেকে রাশিয়াকে সরিয়ে দেয়ার জন্য অন্যান্য দেশগুলোকে রাজি করার জন্য ব্রিটিশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি। হিপি বলেন, যুক্তরাজ্য একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তবে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। অন্যদিকে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার হামলায় দেশটির এ পর্যন্ত অন্তত ১৯৮ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ১১৫ জন।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউক্রেনের সাথে সীমান্ত পারাপারের আটটি চৌকির সবগুলো দিয়ে শরণার্থীদের পায়ে হেঁটে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, কারণ সীমান্ত চৌকিগুলোতে গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। এর আগে পায়ে হেঁটে আসা মানুষদের শুধু একটি চৌকি, মেডিইকা দিয়ে পার হবার অনুমতি দেয়া হচ্ছিল। শরণার্থীদের জন্য নয়টি অভ্যর্থনা কেন্দ্র খোলা হয়েছে যেখানে তাদের খাদ্য, চিকিৎসা সহায়তা এবং তথ্য দেয়া হচ্ছে। সীমান্ত পারাপার চৌকিগুলোর কাছে স্কুল এবং জিমগুলোতে এবং প্রজেমিসল রেল স্টেশনে এই অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলো খোলা হয়েছে।

আলোচনায় প্রস্তুত পুতিন-জেলেনস্কি: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শান্তি এবং যুদ্ধ বিরতি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। তিনি এ বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার জেলেনস্কির প্রেস সচিব সের্গেই নিকিফোরভের বরাতে এ কথা জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম টাস সের্গেই নিকিফোরভ তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেছেন, আমাদের এই অভিযোগ এড়াতে হবে যে আমরা আলোচনায় অস্বীকৃতি জানিয়েছি। ইউক্রেন সব সময়ই শান্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং এটি আমাদের স্থায়ী অবস্থান। আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি।

প্রাণ হাতে নিয়ে বহু দূর পাড়ি ৭ বাংলাদেশীর

রাশিয়ার হামলার পরপরই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে ইউক্রেনের সবাই, হাজারো মানুষের সেই মিছিলে শামিল বাংলাদেশী শিক্ষার্থী শেখ খালেদ বিন সেলিম। ওডেসা স্টেশনে তিনি সঙ্গী পান আরও ছয় বাংলাদেশী তরুণকে। ওডেসা থেকে পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লুভিয়েভ শহরে পৌঁছানোর গল্প শোনান তিনি। গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই কৃষ্ণসাগর তীরের শহর ওডেসা থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ পশ্চিম অঞ্চলের দিকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খালেদ। তিনি বলেন, “ওডেসার বাস এবং ট্রেন স্টেশন পাশাপাশি। লোকজন একটি টিকিটের জন্য মরিয়া হয়ে দুই জায়গায় ছোটাছুটি করছিল। ভাগ্যক্রমে আমি টিকিট পেয়ে যাই। স্টেশনে বাংলাদেশের আরও ছয়জন স্টুডেন্টের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়।পোল্যান্ডে যাওয়া মানুষের ঢল ক্রমশ বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, মানুষের প্রচন্ড ভিড় থাকার কারণে ওইদিন ওডেসা থেকে বাড়তি একটি ট্রেন ছাড়া হয়। তারপরও অনেক মানুষ ট্রেনে উঠতে পারেনি। আমার সামনেই ভারতীয় স্টুডেন্টদের একটি দল অনেক রিকুয়েস্ট করেও ট্রেনে উঠতে পারলো না। ইউক্রেনের অনেক নাগরিকও ট্রেনে উঠতে পারেননি।

যুদ্ধ নিয়ে জনগণের চিন্তা

ওডেসার একটি মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ আক্ষেপ নিয়ে বলেন, মেডিকেলে পড়তে ২০১১ সাল ইউক্রেন আসি। ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনে (ক্রিমিয়া যুদ্ধ) যুদ্ধ শুরু হলে স্টাডি ব্রেক করে দেশে ফিরে যাই। এরপর ফিরে এসে আবার পড়া শুরু করি, এবারও যুদ্ধ। যুদ্ধ যেন আমার পিছু ছাড়ছে না। ওডেসাতে এখনও কয়েকজন বাংলাদেশী আটকা পড়ে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ওডেসা ছাড়ার পর সেখানে মিসাইল হামলার খবর পেয়েছি। সেখানে ইউনিভার্সিটি পোল্যান্ডে শরণার্থীদের ঢল : পোল্যান্ডের সীমান্ত রক্ষা সংস্থা ও চার্চের বাংকার খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ইউনিভার্সিটি জানাচ্ছে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেন থেকে থেকে বলেছিল, চাইলে হোস্টেলের বাংকারে থাকতে পারি। কিন্তু আমি ঝুঁকি নিতে চাইনি। আতঙ্ক-উত্তেজনাআর ঠেলাঠেলি ইতোমধ্যেই এক লাখ ইউক্রেনীয় পোল্যান্ডে ঢুকেছে। করে ওডেসা থেকে ৭৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বিবিসির এ প্রতিবেদক বলেন, শরণার্থীর ঢল বাড়ছে, শনিবার লুভিয়েভ পৌঁছায় খালেদদের ক্লান্ত দলটি কিন্তু সেখানে ভোর ছয়টা (জিএমটি) থেকে বিশ হাজারের ওপর মানুষ তাদের থাকার জায়গা নেই। কিন্তু পৌঁছেও দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে একটার পর একটা হোটেল, হোস্টেল তাদের সকলকে আশ্রয় দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পোল্যান্ড চষে বেড়ান তারা। খালেদ বলেন, এখানে মানুষ গিজগিজ সরকার। যাদের কোথাও যাবার জায়গা নেই, তাদের অস্থায়ী করছে। সবার চোখে মুখে আতঙ্ক।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে পৃথিবী শঙ্কিত

আসার পর জানতে পেরেছি, এখানেও বিমান হামলার আশঙ্কায় সাইরেন বাজানো হয়েছে। সবাই সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ড চলে যেতে চান। প্রচন্ড ঠান্ডা এখানে। থাকার জায়গা নেই। খাবারের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। দুই একটি বাদে বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ব্যাংক বন্ধ, এটিএম বুথের সামনে দীর্ঘ লাইন কোথাও কোথাও বুথে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না শুনেছি। দশ-বারো জায়গায় ঘুরে আমরা থাকার জন্য কোনোমতে একটা হোস্টেল পেয়েছি। এক রুমের মধ্যেই ছয়-সাতজন থাকতে হবে। শুক্রবার রাতে আর সীমান্তের দিকে রওনা হননি খালেদ। তিনি বলেন, পোল্যান্ড সরকার সীমান্ত খুলে দিয়েছে। কিন্তু সেখানে ১৫-২০কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন পড়েছে শুনেছি । ঠান্ডার মধ্যে তাদের পথে থাকতে হবে। তাই আজ রাতে সে পথে রওয়ানা না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিয়েত থেকে বাঙালি আরো দুটি পরিবার এসেছে। তাদের সঙ্গে বাচ্চা আছে। তারা কাল সকালে (শনিবার) যাবে, আমিও তাদের সঙ্গেই যাব। যদি ভাগ্য সহায় হয়, তবে হয়ত ১০-১২ ঘণ্টায় সীমান্ত পেরুতে পালিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছেছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে যারা পালাচ্ছেন, বাসস্থানের আশ্বাসও তারা দিয়েছে।

যুদ্ধ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে পৌঁছাতে পারলে নাগরিকদের থাকা এবং দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়ে পরিস্থিতি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদ। জাতিসংঘের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো, চুপ ভারত-চীন। ইউক্রেনে চলমান রুশ হামলা ঠেকাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক খসড়া প্রস্তাবে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে চীনসহ ৩টি দেশ। গত শুক্রবার উত্থাপিত এই খসড়া প্রস্তাবে ইউক্রেনে চালানো রুশ আগ্রাসনের কড়া ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া যৌথভাবে এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ দেশের মধ্যে ১১টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। আর ভোট দানে বিরত ছিল ৩ টি দেশ। দেশগুলো হলো- চীন, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসাবে মস্কোর ভেটো ক্ষমতার কারণে এই প্রস্তাবটিও ব্যর্থ হয়েছে। তবে শুক্রবার এই খসড়া প্রস্তাব পাস না হওয়াকেও নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে পশ্চিমা দেশগুলো।

তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন?

তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন রুশ বাহিনীর বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত সাতজন মারা গেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের পুলিশ। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটার দিকে বেলারুশ ও রুশ প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনালাপ হয় বলে নিশ্চিত করেছে লুকাশেঙ্কোর কার্যালয়।ইউক্রেনের চারপাশ দিয়ে রুশ সেনারা ঢুকে পড়েছে। রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করছে রুশ সেনারা। এ ঘটনায় আরও রক্তপাত এড়াতে ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। Read in English

রাশিয়া ও ইউক্রেন লড়াই

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, দেশের সামরিক অবকাঠামো এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। এমন অবস্থায় দেশের মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে দেশজুড়ে মার্শাল ল জারি করেছেন তিনি।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘তিনি রাশিয়ার অপ্রোরচিত হামলায় আতঙ্কিত। ব্রিটেন এই হামলার যথাপোযুক্ত জবাব দেবে।’ ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও ড্রাঘি বলেছেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অযৌক্তিক। এর তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়ার জন্য আমরা ইউরোপীয়ান এবং ন্যাটে মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছি, একতা এবং একাগ্রতার সহিত।’

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে?

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ করার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানায় ফ্রান্স। রাশিয়াকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবশ্যই তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। ফ্রান্স সহমর্মিতার সহিত ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াচ্ছে।’

কর্মকর্তারা বলছেন, ওদেসার বাইরে পোডিলস্ক শহরের একটি সেনাঘাঁটিতে হওয়া হামলায় ছয়জন মারা গেছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ আরো জানিয়েছে, মারিউপল শহরে একজনের মৃত্যু হয়েছেইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণায় পুতিন বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিলম্বে আমাদের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন পড়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের দনবাসের স্বাধীন দুটি প্রজাতন্ত্র আমাদের কাছে সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করেছে। জাতিসংঘ সনদের সপ্তম অধ্যায়ের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আমি সেখানে একটি বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ইউরোপে ইউনিস এর তাণ্ডবে প্রাণ গেল ১৬ জনের

ইউরোপে ইউনিস এর তাণ্ডবে প্রাণ গেল ১৬ জনের ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সমূহের উপরে ঝড় ইউনিস আঘাত হানে। বিশেষ করে ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে দেশসমূহের উপরে ইউনিস এর প্রভাব ছিল সবথেকে বেশি। আটলান্টিক মহাসাগরীয় শক্তিশালী ঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জার্মানির শহর ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ইউনিস এর প্রভাবে লন্ডভন্ড সবকিছু। বর্তমানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ আহত হয়েছে শতাধিক এরও বেশি এবং পানিবন্দি হয়েছে লক্ষাধিক। Read in English

ঘূর্ণিঝড় ইউনিস এর তান্ডব

১২২ মাইল গতিতে বয়ে যাওয়া ঝড় টি সমস্ত দেশটিকে লন্ডভন্ড করে গেছে। এতে উপকূলের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে। ঝড়ের কবলে পড়ে গাছ উপড়ে গিয়ে এবং অত্যধিক গতিতে বাতাসের প্রভাবে মানুষের প্রাণহানি ঘটে। প্রবল বেগে বাতাস বহমান হওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে মৃতের সংখ্যা এবং ধরন প্রায় একই রকম। যে কয়টি মৃত্যু ঘটেছে তার সবগুলোই গাছ উপড়ে। বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড সহ বিভিন্ন স্থানে গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে বেশ কজন জার্মানি এবং ইউরোপের বাসিন্দা।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে অনেক স্কুল প্রতিষ্ঠান সহ অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন বন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং কর্মীদের নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। তাছাড়া জার্মানি এবং ইউরোপের বিভিন্ন ফ্লাইট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথমে নিহতের সংখ্যা ৮ জন শোনা গেলেও মৃতের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। সর্বশেষ ঘোষণা মতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ জনে। উদ্ধার কার্যক্রম এখনো চলছে।

ইউনিস ঝড়ে মৃতের সংখ্যা ১৬

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে আবাসস্থল সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। রাস্তার উপরে গাছ পড়ে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।  ঝড়ের কবলে লক্ষাধিক মানুষ ঘর হারা হয়ে এখন রাস্তায়। তাদের বাড়িঘর ঝড়ের প্রভাবে ভেঙ্গে পড়েছে আর্থিকভাবে কয়েক শহরের মানুষ করেছে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।প্রবল জলোচ্ছাসে এবং পানির কারণে বিভিন্ন মার্কেট বাড়িঘর রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রধানরা দেশটির সরকার আশঙ্কা করছে ৯০ কোটি ইউরো বেশি ক্ষতি সাধন হয়েছে। যা পূর্বের কোন ঝড় জলোচ্ছ্বাসে এতটা ক্ষতিসাধন করে নি।

ওমিক্রনে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে

ওমিক্রনে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে সারা বিশ্বে বর্তমানে যে মহামারী টি সবথেকে ভয়ানক আকার ধারণ করেছে সেটি হচ্ছে নোবেল করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে পর্যায়ক্রমে যতই মহামারী আসুক না কেন করোনাভাইরাস তারমধ্যে সবথেকে বেশি ভয়ানক। আশা করা হচ্ছে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মহামারী দেখা দিয়েছে তার মধ্যে আক্রান্তের হার এবং মৃত্যু হার করোনাভাইরাস এর ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি। এটি এক প্রকার ভাইরাস জনিত রোগ হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে এর ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে। এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা সকল মানুষের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই ভাইরাসে আক্রান্তের হার গুণানুপাত হারে বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ব্যক্তি হতে দুইজন তারপর চারজন এইভাবে এর বিস্তার ঘটছে। Read in English

করোনার শেষ পরিস্থিতি

গোটা বিশ্বে প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তেমনি করে বাড়ছে এর বিভিন্ন প্রকারভেদ। করণা মহামারী প্রথম থেকে আসার পর অনেক ধরনের রূপ পরিবর্তন করছে। এর বিভিন্ন রূপের লক্ষণ আলাদা হলেও আক্রান্ত হওয়ার ধরন এবং মৃত্যুহার একই রকম। করোনা মহামারীর একটি ঢেউ শেষ হতে না হতেই আরেকটি নতুন প্রজাতি তার নতুন রূপে আবিষ্কৃত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কার্যকরী কোন টিকা আবিষ্কার করতে পারেনি। তবে এর মধ্যে যে সকল টিকা আমরা পাচ্ছি তা পুরোপুরি কার্যকরী নয়। তবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে তারা যে সকল টিকা আবিষ্কার করেছে সেগুলো পুরোপুরি করোনার জন্য কার্যকরী না হলেও সেসকল টিকার পরিপূর্ণ ডোজ সম্পন্ন করলে আক্রান্তের হাত থেকে বাঁচা না গেলেও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা অনেক গুণে বাড়বে। আজকের সর্বশেষ এবং সারা বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি হচ্ছে –

মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার ৪২৭ জন।

মৃত্যুর সংখ্যা ৫৯ লাখ ৯ হাজার ৭১৪ জন।

সুস্থতার সংখ্যা ৩৫ কোটি ৩৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৮ জন।

মরণব্যাধী ওমিক্রন

বর্তমানে করোনার ওমিক্রন ধরনের জন্য গোটা বিশ্বব্যাপী নতুন করে আবারো আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে গোটা বিশ্বের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি দপ্তর সমূহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অমিক্রণ এর এই ঢেউ না যাওয়া পর্যন্ত ইন্ডিয়া বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড সহ অন্যান্য অনেক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। করণা মহামারীর কারণে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা একদিকে পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী হচ্ছে এবং অন্যদিকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এর প্রতি আসক্ত হচ্ছে। অতি দ্রুততার সহিত যদি কোনো কার্যকরী টিকা আবিষ্কার না হয় তবে গোটা পৃথিবী কে বড় একটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে শিক্ষা চিকিৎসা বাসস্থান ব্যবসা বাণিজ্য আমদানি।

রপ্তানিসহ গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে। যার ফলে মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা গুলো পূরণ করার জন্য তাদের অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। যতদিন পর্যন্ত করোনার কোন কার্যকরী টিকা আবিষ্কার না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল প্রকার কাজ করার জন্য অন্যকে উৎসাহিত করতে হবে এবং নিজেকে সচেতন থাকতে হবে। করোনার থেকে বাঁচার জন্য এবং আক্রান্ত হাত থেকে বাঁচার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এর নির্দেশিকা পরিপূর্ণভাবে আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা করোনার হাত থেকে অনেকটা রেহাই পেতে পারি। কিছুক্ষণ পর পর সাবান পানিতে হাত ধোয়া হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ফেস মাস্ক ব্যবহার করা ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা করোনার সংক্রমণ হতে নিজেকে রক্ষা করতে পারি।

সৌদি-আরবে কি নারী ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে?

সৌদি-আরবে কি নারী ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সৌদি আরবের নারী বলতে আমরা যা বুঝি বড় বড় হিজাবের আড়ালে লুকায়িত নারী। সৌদি আরবসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি ইসলামিক রাষ্ট্রে নারীদের চাকরি করার  পুরুষদের মত অবাধে চলাফেরা সুযোগ-সুবিধা বা স্বাধীনতা নেই। সৌদি আরব বরাবরই নারীদের হিজাব ও পর্দার আড়ালে রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু বর্তমানে এর থেকে বেরিয়ে আসছে সৌদি আরব এবং পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগ দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদির একটি কোম্পানি তাদের এক বিজ্ঞাপনে প্রকাশ করেন রেল চালক পদের জন্য ৩০ জন নারী চালক নিয়োগ দিবেন তারা। এরই জের ধরে ৩০ জন নারী চালকের পরিবর্তে সেই কোম্পানিতে মোট আবেদন জমা পড়ে প্রায় ২৮ হাজার নারীর। প্রতিষ্ঠানটি জানান বাছাইকৃত নারীরা তাদের এক বছরের প্রশিক্ষণ শেষে পবিত্র মক্কা ও মদিনা শহরের মধ্যে উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেন চালানোর সুযোগ পাবেন। নারীর ক্ষমতায়নের দিক থেকে বরাবরই পিছিয়ে রয়েছেন সৌদি আরব। Read in English

রেলে নারীদের চাকরি

বর্তমান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন নারীর ক্ষমতায়নের এবং নারীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য। পূর্বে সৌদি আরবে সকল পদের জন্য কোন নারীর অংশগ্রহণ ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে সৌদি যুবরাজ যে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, উক্ত রেলে নারীর অংশগ্রহণ সৌদি যুবরাজের নারী ক্ষমতায়নের জন্য কাজের একটি নমুনা মাত্র। পূর্বে সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর পরও নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু বর্তমানে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এর থেকে বোঝা যায় সৌদি আরবে দিন দিন নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, বিগত পাঁচ বছরে সৌদি আরবের নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের হার এই  দেশটির জনশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বর্তমানে ৩০ শতাংশ বেশি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীর দক্ষতা বিচক্ষণতার শহীত প্রমাণ করে আসছে।

বিবিসির সূত্রমতে সৌদি আরবে চিকিৎসা বিয়ে-তালাক সহ বিভিন্ন সমস্যার জন্য একটি নারীকে পুরুষের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। কারণ সৌদি আরবের বেশিরভাগ চাকরি থেকে শুরু করে ব্যবসা সবকিছুই পুরুষদের  দখলে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সৌদি আরবে নারী ক্ষমতায়ন

হয়তোবা সেই দিনটার দূরে নয় যেদিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে নারীরা যেভাবে দেশ তথা জাতির কল্যাণে নিবেদিত করছে। সৌদি আরবেও সেটি লক্ষ্য করা যাবে। অন্যান্য দেশে নারীদের যেভাবে ক্ষমতার সুযোগ আছে সৌদি আরবের সেটি নেই। যদি অন্যান্য দেশের মতো নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য সৌদি সরকার একটু শিথিলতা প্রদর্শন করে তবে অন্যান্য দেশের মতো নারীরাও দেশের উচ্চ পর্যায়ে গিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সকল কাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারবে। বর্তমানে সৌদি যুবরাজ নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

সেখান থেকে আমরা বলতে পারি সেই দিন দূরে নয় যখন সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ আসনে আমরা নারীদের দেখতে পাব ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটা সরকারি ক্ষেত্রে যে নারীদের অবদান আছে সেটা আমরা যতক্ষণ তাদের সুযোগ না দেবো বুঝতে পারব না। চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ নানাবিদ এমন কার্যক্রম আছে যেখানে আমরা নারীদের পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রন করাতে পারি। সৌদি আরবে নারীদের যেমন পর্দার আড়ালে কাজ করতে হয় এমন অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে তাদের পরিপূর্ণ পর্দার সহিত কাজ করার সুযোগ-সুবিধা আছে সে ক্ষেত্রে একদিকে যেমন ইসলামিক শাসন কায়েম হবে তেমনি ভাবে আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য নারীদের তাদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ করে দিতে পারব।