বাংলাদেশের কোন জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয়? এবং কেন?
আমের রাজধানী : আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের ৯৪ তম দেশ বাংলাদেশ। তবে আম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ ১০ এর মধ্যে। দেশীয় ফলের রাজা আম। দেশের সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় আম। আর বছর বছর এ উৎপাদন বেড়েই চলেছে। দেশের মানুষের পুষ্টির অন্যতম উপাদান হিসেবে দাঁড়িয়েছে আম। শুধু যে পরিমাণের দিক থেকে আম দেশের প্রধান ফল হয়েছে তা কিন্তু নয়। দেশের অন্তত ৬ টি জেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কৃষি পণ্য হয়ে উঠেছে আম। Read in English
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস হিসেব অনুযায়ী ২০১৯–২০২০ অর্থবছরে দেশে উৎপাদিত হয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার টন আম। বাংলাদেশের ২ লাখ ৩৫ হাজার একর জমিতে আম বাগান রয়েছে। প্রতিটি আম গাছের গড়ে ৭৭ কেজি করে আম উৎপাদিত হয়। অবশ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে বাংলাদেশে আমের উৎপাদন হয় ২৪ লাখ টনের মতো। প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার আমের বাণিজ্য হয়। আম উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন, মোড়কীকরণ ও পরিবহন মিলিয়ে এক বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। প্রতি বছর এপ্রিলে কাঁচা আম বাজারে আসা থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর মাসের আশ্বিনা আম পর্যন্ত আমের বাজার চলতে থাকে।
কোন জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয়?
বাংলাদেশের ৬ টি জেলায় প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদিত হয়। প্রতিবছর এসব জেলা থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র আম সরবরাহ করা হয় এছাড়া বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে এই আম। সবথেকে বেশি আম উৎপাদিত হয় রাজশাহী, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতে। বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় গেলে আপনি এই তিনটি জেলার আম দেখতে পাবেন। বর্তমানে এসব জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির আম দেখতে পাওয়া যায়।
এরমধ্যে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি, বউ সোহাগী, নেংরা, নাগ ফজলি, আলতাপাটি, বউ পছন্দ, হাড়িভাঙ্গা, আম রুপালি, লক্ষণভোগ, মল্লিকা, চোষা আম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব জেলাতে প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদিত হলেও সবথেকে বেশি আম উৎপাদিত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। রাজশাহী বিভাগের একটি অন্যতম জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। প্রতিবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে 3 লাখ টনের ও বেশি আম উৎপাদিত হয়। এজন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সবার পরে পাওয়া যায় অর্থাৎ অন্যান্য জেলার আম শেষ হওয়ার পরেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে পাওয়া যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে কেন আমের রাজধানী বলা হয় তা সম্পর্কে আমরা নিচে আলোচনা করেছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কে কেন আমের রাজধানী বলা হয়?
বর্তমানে আম বাংলাদেশের একটি অন্যতম ফসলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই। এজন্য প্রতিবছরই নতুন নতুন আমের বাগান হতে দেখা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে সর্বাধিক পরিমাণে আম উৎপাদিত হয় এজন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয়। শুধু যে অধিক পরিমাণে আম উৎপাদিত হয় বলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয় তা কিন্তু নয়। গুণগত মানের দিক থেকেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর আম সবার উপরে।
সবথেকে বেশি আমের যত্ন করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম এ। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ এ সব থেকে বেশি আমের আড়ত রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট উপজেলায় আমের সব থেকে বড় বাজার রয়েছে। শুধু তাই নয় সবথেকে পুরাতন আমবাগান চাঁপাইনবাবগঞ্জ এ অবস্থিত। সকল দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য বিখ্যাত এবং প্রাচীনতম। আর এ সকল কারণেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে আমের রাজধানী বলা হয়। আপনারা যারা আমের রাজধানী সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের জানিয়েছি কোন জেলাকে আমের রাজধানী বলা হয় এবং কেন।
আলোচনা শেষে আমরা বলতে পারি আপনি যদি ভালো গুণগতমানসম্পন্ন আম পেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম নিতে হবে। তবে সব জেলার ই আম বর্তমানে ভালো গুণগতমানসম্পন্ন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি অন্যান্য জেলাও এখন গুণগত মানসম্পন্ন আম সরবরাহ করে বাংলাদেশের সকল জায়গায়। আপনারা যদি ভাল মানের আম পেতে চান তবে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানিয়ে রাখতে পারেন।