ফার্মেসির ভেতর গৃহবধূর লাশ উদ্ধার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এমনই ঘটনা ঘটেছে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে একটি ফার্মেসি থেকে শাহনাজ পারভিন নামে এক গৃহবধুর ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ এর সিআইডি বিভাগ। Read in English
গত ১৬ ই ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্টের ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামের একটি ওষুধের দোকান থেকে উক্ত মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়। উক্ত ফার্মেসির মালিক ছিলেন জিতেন চন্দ্র। ফার্মেসি মালিক সহ তার আরো দুজন সহযোগী মিলে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তদন্ত শেষে পুলিশ জানায় শাহনাজ পারভীন কিছুদিন থেকে গোপন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি বিষয়টি জিতেন চন্দ্র কে জানালে শাহনাজ পারভীন কে ফার্মেসিতে আসার জন্য বলেন।
ফার্মেসির ভেতর গৃহবধূর লাশ
শাহনাজ পারভীন উক্ত ফার্মেসি থেকে প্রতিনিয়ত ওষুধ কেনার জন্য ফার্মেসি মালিকের সাথে তার একটি সুসম্পর্ক হয়। এরই জের ধরে তিনি তার গোপন শারীরিক সমস্যা নিয়ে ফার্মেসিতে গেলে জিতেন চন্দ্র তাকে দোকানে কাস্টমার আছে বলে অপেক্ষা করতে বলেন। একসময় রাত গভীর হলে শাহনাজ বাড়িতে আসার জন্য বিচলিত হয়ে পড়েন যখন মার্কেটের লোকজন কমতে থাকে তখন তিনি শাহনাজকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ফেলেন। এবং মার্কেট পুরোপুরি বন্ধ হলে তিনি ও তার দুই সহযোগী মিলে এনার্জি ড্রিংক পান করে শারমিনকে ফার্মেসি এর মধ্যে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকেন। তার অপর দুই সহযোগীর নাম অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) এবং অসিত চন্দ্র গোপ (৪০)।
কার্টুনের মধ্যে ৬ টুকরা লাশ
ধর্ষণের এক পর্যায়ে শাহনাজ পারভীনের জ্ঞান ফিরলে তিনি ধর্ষণের বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেবার হুমকি দেন। তখন তারা তিনজন মিলে শাহনাজ পারভীনের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে এবং দোকানের ফল কাটা চাকু দিয়ে তার দুই হাত, দুই পা, মাথা এবং পেটের ৬ টুকরা করে দোকানের ওষুধের কার্টুনের মধ্যে লাশ রেখে দেয়। ভোরের দিকে তার লাশটি পাশের একটি পুকুরের খামারে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় এবং মার্কেটে লোক চলে আসার ফলে তারা লাশ দোকানের মধ্যে রেখেই দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। পরে সিআইডির একাধিক দল আসামিদের গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানার নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশ কে গ্রেফতার করা হয়। এবং তার তথ্যের ভিত্তিতে জগন্নাথপুর থানা পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনজিৎ ও অসিত কে গ্রেফতার করা হয়।
মৃত শাহনাজ পারভীন তার নিজ বাসায় দুই ছেলে মা বাবা ভাই বোনের সাথে থাকতেন। তার স্বামী একজন সৌদির প্রবাসী বেশ কয়েক বছর থেকেই তিনি সৌদি তে অবস্থান করছেন। এদিকে শাহনাজ পারভীন এর মৃত্যুতে পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার পরিবার সহ এলাকাবাসী তার মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার চায়। এলাকাবাসী সহ এলাকার সাধারন জনগন অপরাধের যথাযোগ্য এবং সময়োপযোগী বিচার চেয়েছেন যেন ভবিষ্যতে এমন ধরনের কর্মকাণ্ড আর কেউ না করতে পারে।