থানকুনি পাতার উপকারিতা: থানকুনি পাতা আমাদের দেশের অন্যতম পরিচিত একটি ভেষজ। এটি দারুন একটি ভেষজ উদ্ভিদ। থানকুনি পাতার অনেক বছর যাবৎ বিভিন্ন রোগের ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার আসছে। দেখতে গোল আকৃতির ছোট এ পাতা অত্যন্ত উপকারী। থানকুনি পাতা গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন এলাকায় থানকুনি পাতা বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়ে থাকে। Read in English
যেমন আদামনি, টেয়া, আদানগুনি, মানামানি, ধুলাবেগুন, মানকি এগুলো কিন্তু থানকুনি পাতার ই নাম। তবে মূলত থানকুনি পাতা না আমি সবাইকে চিনে থাকে। থানকুনি পাতার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা। আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। থানকুনি পাতার উপকারিতা সমূহ জানতে চাইলে আজকের এই আলোচনাটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
থানকুনি পাতার উপকারিতা
থানকুনি পাতা চাষে খুব যত্ন করতে হয় না তবে থানকুনি পাতার উপকারিতা। অনেক ধরনের রোগে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্বাদে তিতা হলেও থানকুনি পাতার গুনাগুন অনন্য। চলুন তাহলে থানকুনি পাতার উপকারিতা গুলো জেনে নেয়া যাক-
- প্রচুর ভিটামিন-সি থাকায় থানকুনি পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের অবসাদ ও ক্লান্তি ভাব দূর করতেও থানকুনি পাতার রস খাওয়া যেতে পারে।
- যে কোনো ক্ষত স্থানে বা শরীরের কোন স্থানে কেটে গেলে রক্তপাত বন্ধে থানকুনি পাতা বিশেষ উপকারী। ক্ষতস্থানে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায় এবং পাশাপাশি ক্ষত সৃষ্টি হয়না।
- থানকুনি পাতা ভেজানো পানি খেলে মানুষের স্নায়ু শিথিল হয়। এর ফলে ভালো ঘুম হয় তাই ভালো ঘুমের জন্য নিয়মিত এই পাতার রস বা থানকুনি পাতা ভেজানো পানি খাওয়া যেতে পারে।
- কাশি থেকে মুক্তির জন্য থানকুনি পাতার গুনাগুন অনন্য। 2 বা 3 চামচ থানকুনি পাতার রস খেলে সহজেই কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তিতাস আজ থেকে মুক্তি পেতে এর সাথে চিনি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- জ্বরের সময় থানকুনি পাতা এবং শিউলি পাতার রস একসাথে মিশিয়ে খেলে সহজে জ্বর কমে যায়।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে থানকুনি পাতার রস খাওয়া যেতে পারে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতেও থানকুনি পাতার বেশ সুনাম রয়েছে। নিয়মিত এই পাতা বেটে মধুবা গোলাপ জলের সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে উজ্জলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের ব্রণ জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- পেটের বিভিন্ন সমস্যায় থানকুনি পাতার রস বেশ কার্যকরী। আমাশয় থেকে শুরু করে আলসার দূর করতেও এই পাতা সাহায্য করে। আলসার বা আমাশয় রোগে এই পাতার রস খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
থানকুনি পাতার উপকারিতা অনেক। তবে অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী এই পাতা খেতে হবে। অনেকভাবেই থানকুনি পাতা খাওয়া যেতে পারে। যেমন-
- সকালে গরম পানির সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতার রস খাওয়া যায়। এটি বেশ কাজে দেয়।
- কাঁচা দুধের সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতার রস খাওয়া যায়।
- তেতো স্বাদ দূর করতে মধু বা চিনির সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতার রস খাওয়া যায়। মধুর সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- চিনির সাথে মিশিয়ে থানকুনি পাতার রস খেলে কাশি থেকে আরাম পাওয়া যায়। দুই তিন দিন একটানা এক দুই চামচ রসের সাথে অল্প চিনি মিশিয়ে খেলে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- প্রতিদিন সকালে থানকুনি পাতার রসের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে লিভারের অনেক উপকার হয়। টানা পাঁচ ছয় মাস থানকুনি পাতার রস ও হলুদ খেলে লিভার সুস্থ থাকবে।
থানকুনি পাতার অপকারিতা
অন্য সবকিছুর মতই থানকুনি পাতার কিছু ক্ষতিকর দিক বা উপকারিতা রয়েছে। যেকোনো কিছুই অত্যাধুনিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। থানকুনি পাতার ক্ষেত্রেও এই ক্ষতিকর দিক বিদ্যমান। থানকুনি পাতার ক্ষতিকর দিকগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
- পেট খারাপের এক মহা ঔষধ হলো থানকুনি পাতা। তবে বেশি পরিমাণ খেলে পেট ভালো হওয়ার পরিবর্তে আরো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
- প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থানকুনি পাতা খেলে মাথা ঘুরতে পারে।
- অনেকের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতার কারণে এলার্জি জনিত সমস্যা হতে পারে।
- বিভিন্ন অপারেশন রোগীদের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা না খাওয়াই উত্তম।
- বিভিন্ন লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীরা থানকুনি পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
থানকুনি পাতা চিনতে ভুল করে অন্য পাতা খেয়ে নিলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অনেক পাতা শরীরের জন্য বিষাক্ত হয়। তাই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
থানকুনি পাতা খুব সহজে হাতের নাগালে পাওয়া যায় তাই বিভিন্ন রোগের সহজ সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের আশেপাশে জঙ্গলে বিভিন্ন স্থানে থানকুনি পাতা জমে থাকে। আমাদের অবশ্য এগুলো নষ্ট করা উচিত নয় কেননা বিভিন্ন বিপদের সময় এগুলো আমাদের কাজে আসে। আলোচনার অংশ বুঝতে সমস্যা হলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন। এ ধরনের বিভিন্ন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে আসতে পারেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।